পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V)) o সবুজ পত্ৰ VEST, YORt চেয়ে দেখল। নিবিড় আঁধারে কিছুই দেখা যায় না-কিন্তু স্পষ্ট পদশব্দ স্পষ্ট হতে স্পষ্টতর হতে লাগল। ধীরে ধীরে কল্পশেখরের দৃষ্টি আঁধার ভেদ করতে সমর্থ হ'ল। সে দেখলে একটা মানুষের মূৰ্ত্তিই বটে—তারই পানে আসছে। কল্পশেখরের শিরায় শিরায় শোণিত দুরন্ত নৃত্য লাগিয়ে দিলতার হৃদয়ে যেন অসংখ্য বিদ্যুৎ-প্রবাহ পরস্পর মারামারি কাটাকাটি করতে লাগল। কল্পশেখর উঠে সেই মূৰ্ত্তিটীির পানে অগ্রসর হ’ল। যখন তারা পরস্পর কাছাকাছি হ’ল তখন কল্পশেখর যেন অপরিচিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল-“তুমি কে ?” “আমি তরুণী ।” মুহুর্তে চারটি বাহু দুইটি দেহকে জড়িয়ে নিল—তাদের আজীবন ব্যৰ্থ প্ৰাণের অনন্ত পিপাসা নিয়ে, চারটি অধর একটা নিবিড় চুম্বনে যুক্ত হ’ল—তাদের আজীবন পরিপুষ্ট হৃদয়ের অদম্য কামনা নিয়ে । তারপর আজীবন সাধনার সিদ্ধিলাভের শেষে জীবনব্যাপী ক্লান্তি যেন তাদের দুটি শরীরের ওপরে একেবারে ভেঙে পড়ােলতারা সেইখানে বসে পড়ল-তারপর ধীরে ধীরে পরস্পরের আলিঙ্গনবন্ধ হ'য়ে সেই পাষাণ শয্যায় ঘোর নিদ্রায় অভিভূত হয়ে পড়ল। পাষাণ-শয্যা ?-না, সে-শয্যা পুষ্পের চাইতেও কোমল। পরদিন প্রথম উষার সঙ্গে সঙ্গে কল্পশেখরের ঘুম ভাঙিল। ধীরে ধীরে তার সব কথা মনে পড়ল। সফল তার জীবন। আজীবন সাধনার ধন আজ তার আলিঙ্গনে। কল্পশেখর আলিঙ্গন-বদ্ধার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলা-একি !!!