পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা बभू (98 ዓ ইত্যাদি । ইংরেজিতে যে এতদূর বিদ্বান, সে গ্রামের পাঠশালাতেই পড়াশোনা ইতি করেছে এমন একটি কৃষক-বালকের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্বীকার করতে লজিজত না হবেই বা কেন ? ভজহরি আবার জাতিতেও এমনি নীচ যে, তার হাতের জলটুকু মুখে তুলতেও নেই। তারপর ভজহরির পিতা জয়হরি সরকার সামান্য একজন হেলে । অজিতের বাপের সঙ্গে সে লাগে কোথায় ? অজিতের বাপ জেলা কোর্টের উকীল, জজ ম্যাজিষ্ট্রেটের সুমুখে দাঁড়িয়ে তিনি ইংরেজি ভাষাতে কত লম্বা লম্বা বক্তৃতা করেন। এমনি ধারা যথেষ্ট হেতু ছিল, যাতে করে অজিতের মনোবৃত্তিগুলো দিনে দিনে ভজহরির প্রতি বিমুখ হয়ে উঠল। তবু অজিতের বাড়ী আসবার সংবাদটি কানে পৌঁছামাত্র, ভজহরির পিসিমা ভ্ৰাতপুত্রের বেশ-ভূষা বেশ একটু পরিপাটি করে, তাকে সঙ্গে নিয়ে অজিতদের বাড়ী এসে হাজির হত। ভজহরির মাথার উশ্বকো-খুশকে চুলগুলো তেলে-জলে বেশ করে চুপিয়ে দেওয়া হ’ত। পরণে তার থাকৃত রঙ্গীন জোলাটে কাপড়, ঘাড়ের উপর কেঁচানো ফুলদার একখানি চাদর। দু'হাতে তার রূপের দু’গাছি বালা । তারপর ভজহরির কপালের উপর এসে পড়ত, তার এক গোছা চুলের সঙ্গে সংলগ্ন রূপের দু’টি ঘুনটি। আর তার বুকের উপর ঝুলন্ত রূপের একটি পান। কিন্তু ভজহরির এই সজ্জাটি তার পিসিমার প্রাণে যতই আনন্দ দান করুক না কেন, অজিতের অন্তরে আদৌ গ্ৰীতির সঞ্চার করত না। ইংরেজি ইস্কুলের বিদ্যা আর সহরের অভিজ্ঞতা নিয়ে অজিত যে কালে বাড়ী আসূত, গ্রামের ভজহরি ছোড়াটা তার যে বন্ধু এ কথা স্মরণ করে, অজিত ঠাকুরমার গুরুতর অপরাধটি মনে প্ৰাণে কোনক্রমে 8R