পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\) o সবুজ পত্ৰ W5tiq, Yvot কিন্তু একদিকে অজিত যেমন দেশের ভবিষ্যৎ ভেবে সারা হছিল, অন্যদিকে অজিতের পিতা অনাদিনাথ তেমনি পুত্রের ভবিষ্যৎ-চিন্তায় বিশেষ করে মন দিয়েছিলেন। অজিত এম এ, পাশ করবার পর থেকে, অনাদিনাথ প্রতিদিন জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের কুঠাতে গিয়ে তঁকে সেলাম জানিয়ে আসতে লাগলেন। তারপর বেশ একটি সুযোগ উপস্থিত হ’ল । বিভাগীয় কমিশনার সাহেব অনাদিনাথের কোন এক মক্কেল-জমিদারের এলাকার ভিতর শিকার করতে এলেন। অনাদিনাথ স্বয়ং উপস্থিত থেকে জমিদারের খরচায় রসদাদি জোগালেন, এবং যথাবিধি তদবির-তদারক করলেন। এর ফলে, অনাদিনাথ জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট আর বিভাগীয় কমিশনার উভয়েরই বিশেষ শ্ৰীতিভাজন হলেন । বলা বাহুল্য, সঙ্গে সঙ্গে হাকিমী-পদে প্রতিষ্ঠিত হবার যোগ্যতা পুত্ৰ অজিতমোহনের অনেকটা বেড়ে গেল। তবু একটা বাধা ছিল, অজিতের বয়সের অঙ্কে একটি বৎসর বাহুল্য হয়ে পড়েছিল। সেটি বেড়ে ফেলতে অজিতের বিশেষ বেগ পেতে হ’ল না। ম্যাজিষ্ট্রেটের সুমুখে অজিত এমন একটি সত্য-পাঠ করল, যার প্রধান অঙ্গই হ’ল-জল-জ্যান্ত একটি মিথ্যা ! যে পদের প্রধান কৰ্ত্তব্য হ’ল চোরকে সাজা দেওয়া, সেই পদটি অধিকার করুবার জন্য সর্বপ্রথমে চুরি বিদ্যাই অজিতকে অবলম্বন করতে হ’ল । তবে পরদ্রব্য অবশ্য নয়, আপনার বয়স চুরি, কাজটি হয়ত গহিত না হতেও পারে। তবু অজিতের বিবেক-বুদ্ধি তার প্ৰাণে যে হুল না ফুটিয়েছিল, তা নয়। কিন্তু মাথার উপর ছিল তার পিতৃ-আজ্ঞা। পরশুরাম যে দেশের দশ-অবতারের এক অবতার, সেই দেশেতে জন্ম নিয়ে পিতৃ-আদেশ অমান্য করবে। এমন সাধ্য কার ?