পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা दकू O3S কত যুগ যুগান্তরের শ্রদ্ধার ভারে যে সংস্কারটি মনের ভিতর কেটে বসেছে, একদিন ইচ্ছামাত্র সেটিকে মন থেকে সরিয়ে ফেলা, বড় সহজ কথা ত নয়। কাজেই দেশের উন্নতিকল্পে যে সব শুভ অভিপ্ৰায় আকাশের তারার মত অজিতের অন্তরে এক একটি করে ফুটে উঠেছিল, পিতৃ-আজ্ঞার সুমুখে এক নিমিষে সব যেন আকাশ কুসুমের মতো ঝরে পড়ল। দেশ উদ্ধারের সমস্ত সংকল্প ত্যাগ করে, চোর ডাকাতের দণ্ড-মুণ্ডের একটি বিধাতারূপে অজিত একদিন বিচারআসন দখল করল। L অজিতের কাৰ্য্যকালের প্রথম দু’টি বৎসর কেটেছিল তার আপনার জেলাতে। সেই সময়ের একটি ঘটনা, নিতান্ত ক্ষুদ্ৰ হ’লেও আজকের এই ইতিহাসের প্রধান ঘটনা । যে গ্রামের মাটিতে অজিত ভূমিষ্ঠ হয়েছিল, আর যাকে জড়িয়েছিল তার শৈশবের স্মৃতি, অৰ্দ্ধ যুগ বাদে আবার একটি দিন অজিত সেই গ্রামে পদার্পণ করল। এবার অবশ্য গ্রামের একজন অধিবাসী রূপে নয়, একটি বাটোয়ারা মোকদ্দমার তদন্তকারী একজন হাকিম স্বরূপে। গ্রামে এসে অজিত তার বাড়ীর ভিটোতেই তাঁবু গাড়ােল। বাড়ীর ঘর-দুয়োর তখন একখানিও অবশিষ্ট ছিল না। ঘরগুলোর সব চালের খড় পচে খসে পড়েছিল। বঁাশের সাজি উইতে জীর্ণ করেছিল। মাটির দেয়াল বৃষ্টির জলে ধুইয়ে ধ্বসে পড়েছিল। ঘরের মেঝের উপর ঘাস-দুৰ্বে গজিয়েছিল। আর বাড়ীর উঠোন এরণ্ডআকন্দ, শুটি, ভেঁটি, তৃণ, লতা, গুল্মতে ভরে উটেছিল। বাড়ীর এই দৃশ্য কোন পরম আত্মীয়ের চরম দুৰ্দশার মতো অজিতের মনকে বড়ই পীড়া দিতে লাগল। আজ যেন অতীত তার মোহিনী রূপ ধারণ