পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা সাহিত্যের-জাতিরক্ষা Vt) মিল সেটা শুধু “কৃ” ধাতুর মিল, তবে আমাদের সামাজিক অনুষ্ঠানদিতে, যেমন বিবাহ পৈতে শ্রাদ্ধ ইত্যাদিতে এখনও সে যুগের ক্রিয়াদির একটু ছিটে ফোটা রকমের মিল আছে। তবে বলা বাহুল্য সবাই জানেন যে, সে মিলাটা অত্যন্তই বাহিরের মিল-ভিতরের নয় । কেবল তাই নয়। আমাদের ধৰ্ম্মের সনাতনত্বের ঐ অর্থ অনুসারে আমাদের আর হিন্দু হবার কোন দিনই উপায় নেই। কারণ, যতই চেষ্টা করা যাক না কেন, একই কল্পযুগে বিশ্বমানবের জীবনে একই ভাব ঠিক অবিকল একই রকমে দু’বার আসে না-বিশ্বমানবের যে কোন অংশ সম্বন্ধেও সেই কথা । কিন্তু ঐ যে বলেছি “কৃ” ধাতুর মিল—ঐ মিলিটাই হচ্ছে আসল মিল। ঐটেই হচ্ছে সনাতনত্বের মূল-ঐ দিক থেকেই হিন্দু সনাতন। ঐ “কৃ” ধাতুর পিছনে হাজার যুগে হাজার প্রত্যয় লাগিয়ে হাজার }ভঙ্গীতে মানুষ নাচুবে কিন্তু “কৃ” সর্বদাই “কৃ”। এই সত্যটাই প্রাচীন ঋষিরা দেখতে পেয়েছিলেন, আর অর্বাচীন আমরা, দেখতে পাচ্ছি নে। সে যুগের তঁরা বুঝেছিলেন যে, প্রত্যয়ের পরিবর্তন করা চলতে পারে। কিন্তু ঐ “ক” ধাতুকে ত্যাগ করবেন যিনি, ভঁার এ জগতে নিস্কৃতি নেই। আর আজ আমাদের যে অবস্থা তার প্রধান কারণ হচ্ছে এই যে, ঐ “কৃ” ধাতুটাকে খাটো করে আমরা প্ৰত্যয়টাকে বাড়িয়ে তুলে মনে করেছি যে সেইটেই সনাতন। তেমনি আমাদের ধৰ্ম্মের সঙ্গে চার হাজার বছর পূর্বের আর্য্যদের ধৰ্ম্মের যে মিল সেটা হচ্ছে “কৃ” ধাতুর মিল-মনের মিল নয়। কিম্বা অনুষ্ঠানের মিল নয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই পুরাতন মনকেই সনাতন বলে’ মনে করেন। কথাটা আমি বানিয়ে বলছি নে। · {0ግ .