পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শবু পত্র বৈশাখ,১৩২৫ এমনি করিয়া সমাজে প্রথা জিনিসটির উৎপত্তি হইয়াছে। প্রত্যেক বার আমাদের যদি ভাবিতে হইত, দেখা হইলে গুরুজনদের সঙ্গে কি ব্যবহার করিব শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য কোনও দিন ডিগবাজী খাইলাম কোনও দিন বা জিহ্বা বাহির করিলাম—তবে বড়ই মুস্কিল হইত। তাই বাঁধা নিয়ম হইল প্রণাম করা। মানুষ বাড়ী তৈয়ারি করিয়া রাখিয়া দেয়, পুত্র পৌত্রাদি ক্রমে ভােগদখলের জন্য। শক্তির অপব্যয় নিবারণের জন্য প্রাণকে এইরূপ নিয়ম বাঁধিয়া দিতে হইয়াছে, অর্থাৎ সামাজিক কল গড়িতে হইয়াছে। সামাজিক বিষয়ে যত কিছু তর্ক সে হইতেছে—ড়ের সহিত কারবারে, কলবস্তুকে যতটা স্বীকার করিয়াছি, তাহার পরিমাণ উচিত কি না, এই লইয়া। আপনার ভিতর হইতে যে চেষ্টা, প্রাণ, সেই চেষ্টাকে তুমি কত দূর মানিবে, এই লইয়া তর্ক। প্রাণকে যদি বড় জায়গাতেও ঘুম পাড়াইয়া রাখি, সকল জায়গাতেই যদি বাঁধা নিয়মে চলি, তবে চলাই হয় না। যে জাতি সুদূর অতীতের লােকাচার, দেশাচার, মনু পরাশর, এইসকলের উপর সব বিষয়ের বরাত দিয়া নিশ্চিন্ত থাকে, সে নিশ্চেষ্ট নিষ্ক্রিয় তামসিক হইয়া যায়, তাহার অধঃপতন কে ঠেকাইবে । আমাদের সব বাধা, এমন কি ধর্ম এবং আচারও বাঁধা হইয়া গিয়াছে। আমরা নিজে যাহা কিছু করিতে পারিতাম, তাহার বরাত দেওয়া রহিল, সংহিতা স্মৃতির উপর আমার চলায় প্রয়ােজন নাই -এক জায়গায় ঘানির মত বােরাই হইল আমার চলা। নিয়ম যখন অতিরিক্ত হইয়া উঠে, তখন প্রাণের সার্থক চলিয়া যায়। মা তখন ভস্মাচ্ছন্ন আগুনের মত হইয়া উঠে। সে যখন খড়ের সহিত, 1