পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, যষ্ঠ সংখ্যা • নব-বিদ্যালয় । সাহিত্য, অন্তত সাধু-বাঙলা সাহিত্য হতে পারে না, তার প্রমাণ শতকরা নিরানব্বই জন বাঙলা গদ্য লেখকের লেখায় অর্থাৎ আমাদের সকলের লেখায় নিত্যই পাওয়া যায়। অতএব ইংরাজি না শিখলে যে বাঙলার সর্বনাশ হবে, এ বিষয়ে দ্বি মত নেই-এবং থাকতে পারে না। তবে বাঙলা না শেখাটা ইংরাজি শিক্ষার সদুপায় কি না সে বিষয়ে মতভেদ el আমাদের বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির প্রসাদে দেশের লোক যে ইংরাজি শিখছে-ইংরাজি নবিশদের এই ধারণাটি অনেকটা অমূলক। পাঁচ বৎসর বয়েস থেকে সুরু করে পচিশ বৎসর বয়েস পৰ্য্যন্ত দিনের পর দিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে’-আমাদের বিদ্যার্থীরা যে, ইংরাজি ভাষার উপর কতটা অধিকার লাভ করে, তার পরিচয় যিনি কখন B. L. পরীক্ষার কাগজ পরীক্ষা করেছেন, তিনিই পেয়েছেন ।... আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে র্যাদের হাতে উকিলের সনন্দ দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে, তঁাদের মধ্যে শতকরা নব্বই জন সাধু-ইংরাজি লেখা দূরে থাকু শুদ্ধ ইংরাজিও লেখেন না, শতকরা পাঁচিশজন লেখেন বাবু ইংলিশ, আর শতকরা দশজন যা লেখেন, তা দিনেমার ওলন্দাজ কিম্বা আলেমানের ভাষা হতে পারে।-কিন্তু ইংরাজের নয় ; অথচ এরা সকলেই কলিকাতা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট । এত দীর্ঘকালব্যাপী ইংরাজি ভাষার এই একাগ্ৰ চৰ্চা এতটা বিফল হয় কেন ? বাঙালী জাতি সরস্বতীর কৃপায় বঞ্চিত নয়, তবে আমাদেয় যুবকদের মধ্যে শিক্ষার এই ব্যর্থতার কারণ কি ?-কারণ এই যে, পাঁচ বৎসর বয়েসে ছেলেরা ইংরাজি ধরে। এবং পাঁচশ বৎসর বয়েস পৰ্যন্ত তারা দিবারাত্ৰ এক ঐ ইংরাজিরই চর্চা করে । ,