পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, সপ্তম ও অষ্টম সংখ্যা বাঙলা কি পড়ব ? 8 Sv) ভারতচন্দ্রর কাব্যের সুরের অবশ্য কোনও গাম্ভীৰ্য্য নেই, তার কারণ র্তার কাব্যের বিষয়েরও কোনরূপ গাম্ভীৰ্য্য নেই । তার ভাষা তার ভাবের মতই হাল্কা, এত হাল্কা যে সময়ে সময়ে তা ছিবলেমির কাছ’ ঘেঁসে যায়, কিন্তু সে ক্ষেত্রেও তার বিশিষ্টতা নষ্ট হয় না, তা ইত্যর হয়ে পড়ে না। তার ভাষা ফুরফুরে কিন্তু , জ্যািলজেলে নয়, ঝরঝরে ; কিন্তু খটুখটে নয়। এটা নিতান্তই দুঃখের বিষয় যে ভারতচন্দ্র গৎতোড়ায় তার হাত তৈরি করেছিলেন, রাগের সাধনা তিনি কখনো করেন নি। ইচ্ছে করলে তিনি যে আলাপেও সিদ্ধ হস্ত হতে পারতেন, তার ইঙ্গিত তার কাব্যের ভিতরই পাওয়া যায়। সে যাই হোক বাঙলা ভাষার সুর ও ছন্দের গুণের পরিচয় নিতে হলে, প্ৰাচীন বঙ্গসাহিত্যে ভারতচন্দ্র ছাড়া আর দ্বিতীয় গুণী নেই, যার শরণ আমরা গ্ৰহণ করতে পারি। এ প্ৰবন্ধ শেষ করবার আগে আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যে রামপ্রসাদের গান ক’টি বাঙলা সাহিত্যের অপূর্ব সম্পদ। এ গানের ভাষা ভাব, সুর সবই হচ্ছে খাটি বাঙলা । এর ভাষার ভিতর ব্ৰজবুলির ভেজাল নেই, এর ভাবের অন্তরে বৃন্দাবনের প্রভাব নেই, এর সুরের গায়ে হিন্দুস্থানী ঢঙ নেই; অথচ গান হিসেবে ভাবে ও ভাষায় এর তুল্য অকৃত্রিম ও অকপট ও জোরালো-সাহিত্য প্ৰাচীন বঙ্গ-সাহিত্যে আর নেই। রামপ্ৰসাদের কবিতার প্রধান বিশেষত্ব এই যে, এ সাহিত্য আগাগোড়া মর্দানা -এ গুণ বাঙলা সাহিত্যে দুর্লভ। s ভারতচন্দ্রের “বিদ্যাসুন্দর” প্ৰকাশিত হবার পর রামপ্ৰসাদের জ্ঞান হল যে, ও-শ্রেণীর কাব্য রচনা করা তার কৰ্ম্ম নয়। এই সুবুদ্ধি