পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

০২ সবুজ পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ আমার বােধ হয় এ জগতে কিছু যদি খাপছাড়া বদনামের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে ত সে আমাদেরই ঐ নূতন। সেই ত পুরাতনকে বর্তমানের সঙ্গে তাল রেখে চলবার ক্রমাগত সাহায্য করে আসছে ; সেই ত কালকের জগতকে আজকের জগতের সমস্ত পরিবর্তনের সঙ্গে পা ফেলে চলতে, হাত ধরে শিখিয়ে দিচ্ছে ; সেই ত তাকে প্রতিক্ষণে খাপছাড়া হতে দিচ্ছে না। সমস্ত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আজও তাকে সৃষ্টিছাড় হবার সমস্ত আশঙ্কা, সমস্ত সম্ভাবনার হাত হতে, সেই ত মা’র মত করে আগলে রেখে দিয়েছে। তাই আমরা আজ প্রাচীনের জীর্ণ দেউলের সর্বোচ্চ পৈঠার উপর দাঁড়িয়ে নবীনকে সাদরে আহ্বান করছি, আমাদের প্রাচীনকে মহিমান্বিত করে তােল- বার জন্যে। হে নবীন ! তুমিই ত প্রাচীনের সমস্ত তালুক মুলুক আজ পর্যন্ত সমান ভাবে রক্ষা করে আসছে, বিশ্বস্ত কর্মচারীর মত। তুমিই ত প্রাচীনকে আজও নিঃস্ব হবার সমস্ত সম্ভাবনা হতে বাঁচিয়ে রেখেছ, তাই তােমার উপাসক আমরা নিজেদের সকলের চেয়ে সংরক্ষণবাদী বলে গর্ব করে থাকি। তাই তােমাকে যারা ভালবাসে, তাদের আমরা সকলের চেয়ে প্রাচীন-ভক্ত বলে শ্রদ্ধা করি। নবীনের ঐ সুক্ষ গোঁফের ফাঁকে ফাঁকে কত বড় প্রাচীনতার গাম্ভীর্য যে লুকিয়ে রয়েছে, তা যদি সকলে দেখতে পেতো, তাহলে নবীনের জন্যে ঘরে ঘরে উৎসব জেগে উঠত, তার আগমনের পথ কুসুমাস্তৃত হয়ে উঠতাে। যা অপরিচিত তাইত নূতন, যাকে চিনতে যত বেশী দেরি হয় সে তত বেশী নূতন ; আর তিন সেই, যাকে দেখলেই চিনতে পারি। আজকের এই যুগে আমরা কি চিনিনা বেশী করে জাতিভেদ-বিদ্বেষকে