পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86 শবু পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ প্রবন্ধ জিনিসটে সাহিত্য কিনা, এই নিয়ে আমি এদানিক মাথা বকাচ্ছিলুম, কিন্তু কোনও একটা স্থিরসিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি নি; এমন সময়ে তােমার একটি কথায় আমার সকল দ্বিধা দূর করে দিলে। তুমি লিখেছ—“প্রবন্ধ স্ত্রীলােকে পড়ে না, পড়তে চায় না, পড়তে পারে না এবং পড়লে কাতর হয়ে পড়ে।” এ কথা যে সত্য, তা অস্বীকার করবার জো নেই। প্রবন্ধ জিনিসটি জ্যামিতির প্রতিজ্ঞার ছাঁচে ঢালাই করা ; এবং ইউক্লিড আর যারই হ–স্ত্রীলোকের প্রিয় লেখক নন। ও-জাতির কাছে আসল বস্তুই হচ্ছে ১. E. D.-তার প্রমাণ-প্রয়ােগ যেমন অবান্তর, তেমনি বিরক্তিকর। ভাল কথা, ইউক্লিড সম্বন্ধে সেদিন কোন একখানা বইয়ে একটা কথা পড়ছিলুম, যা শুনে তুমি না হেসে থাকতে পাবে ও ভদ্রলােক স্ত্রীলােকের বেশ ধারণ করে থাকতেন। এর কারণ শুনলে আরও আশ্চর্য হয়ে যাবে। ইউক্লিড ছিলেন মেগারার অধিবাসী। তখন মেগারার সঙ্গে আথেন্সের ঘাের শত্রুতা চলছিল। মেগারার লােকের আথেন্সে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছিল, সে নিষেধ অমান্য করে কেউ আথেন্সে দেখা দিলে তার প্রাণদণ্ড হত। ইউক্লিড কিন্তু নিজের প্রাণের চাইতে তার গুরু সক্রেটিসের মুখের কথা এত বেশী বহুমুল্য মনে করতেন, যে তিনি মেয়ে সেলে রাত্রিযােগে আথেন্সে যাতায়াত করতেন। তাঁর রূপের গুণে তাঁর ছদ্মবেশ কখনও ধরা পড়ে নি। এমন অভিসারিকার কথা এ দেশে কেউ কখন পড়েছে, শুনেছে। এর পর তার মন থেকে যে ঐ সব ভীষণ প্রতিজ্ঞা বেরবে তাতে আর আশ্চৰ্য্য কি। ইউক্লিড নারীবেশই ধারণ করুন আর যাই করুন, যে লেখার ভিতর ইউক্লিডের রূপ আছে, তা মেয়ে- ।