পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বৰ, প্রথম সংখ্যা পত্র আজ আমাদের পশ্চিম আকাশে রক্তসন্ধ্যা দেখা দিয়েছে। যে সমরানল সমগ্র ইউরােপে ও অর্ধেক এসিয়াতে ব্যাপ্ত হয়ে পড়েছে; সে আগুন শুনছি আমাদের ঘরেও লাগবার সম্ভাবনা; এবং সে সম্ভাবনাও সুদূর নয়, কেননা যে যুগে বাস্প আর বিদ্যুৎ হয়েছে মানুষের বাহন, সে যুগে দুর’ শব্দের কোনও জানা শােনা মানে নেই। এ সকল দুর্নিমিত্ত দেখে আমরা সকলেই ভীত না হয়ে পড়ি, ত্রস্ত হয়ে উঠেছি। তাদৃশ ভীত না হবার কারণ, আমরা আমাদের চিরকেলে অভ্যাসবশত সাপকে লতা বলে মনকে প্রবােধ দিচ্ছি, যদিচ আমরা সকলেই জানি, লতা বললেও সাপ সাপই থাকে এবং তার কামড়ে মানুষ মরে। আর জৰ্মাণি যে সে সাপ নয়, একেবারে অজগর। এ অবস্থায় আমাদের কি কৰ্ত্তব্য তা বলে দেবার ভার রইল, আমাদের পলিটিকাল নেতাদের হাতে। “যার কর্ম তারে সাজে, অন্যলােকে লাঠি বাজে” এ কথা যদি সত্য হয়--এবং এ কথা যে সত্য তা এক পলিটিসিয়ান ছাড়া আর কে অস্বীকার কবে—তাহলে দেশের লােককে তাদের কর্তব্য সম্বন্ধে উপদেশ দেওয়া হতে, আমাদের নিরস্ত থাকাই শ্রেয়। কেননা সাহিত্যের কাজ, কাউকে কর্তব্য শেখানাে নয়, সকলকে আনন্দ দেওয়া। এ পর্যন্ত বােধহয় আমরা সকলেই একমত। তারপর প্রশ্ন ওঠে এ অবস্থায় সরস্বতীর সেবকদের পক্ষে কি করা কর্তব্য। প্রথমেই মনে হয় এ সমস্যার সহজ মীমাংসা হচ্ছে সাহিত্যের দোকানপাট তুলে দেওয়া। এই আসন্ন বিপদের দিনে আমরা লিখতে পারি, কিন্তু সে লেখা পড়বে কে ? কিন্তু দোয়াত কলমের সংস্রব না হয় আমরা ত্যাগ করলুম, তাই বলে কি দেশগুদ্ধ লােকের পক্ষে পুথির