পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লবু পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ সংস্পর্শ ত্যাগ করা সঙ্গত হবে? ঝড় বলল, ভূমিকম্প বলে, বন্যা বলো, এ সব ব্যাপার অতি ভীষণ হলেও ক্ষণস্থায়ী, আর সাহিত্য অতি সুকুমার হলেও চিরস্থায়ী। সুতরাং দুর্দিনেও তা অপরিহার্য। তবে সুদিনের সাহিত্য ও দুর্দিনের সাহিত্য অবশ্য এক নয়। গেটে বলেন, দেশে যখন মহামারি উপস্থিত হয় তখন লােকের পড়া উচিত টনিক সাহিত্য। এ উপদেশ যখন গেটের তখন, আমাদের সকলকে তা মাথা পেতে নিতে হবে। তবে সাহিত্য সম্বন্ধে “টনিক” বিশেষণের সার্থকতা কি তা আন্দাজ করতে পারলেও দুকথায় বুঝিয়ে বলা অসম্ভব। তবে কোন্ সাহিত্য যে টনিক নয়, সে কথা বলা তেমন শক্ত নয়। প্রথমত আমাদের চলতি সাহিত্যের কথা ধরা যাক। যে সাহিত্যের দিনে দুবার জন্ম হয়, সংবাদ পত্রের স্তন্তে আর বক্তৃতার মঞ্চে, আর যার নাম পলিটিকাল সাহিত্য, তা অবশ্য মােটেই টনিক নয়। সে সাহিত্যের যে রস, তা আমাদের অলঙ্কার শাস্ত্রের মধ্যে খুজে পাওয়া যাবে না। সে রস মিশ্র এবং লােকে বলে তা বিলেতি। করুণ রসের “সােডার” সঙ্গে বীররসের “আসিড মিশিয়ে তা তৈরি করতে হয়। তাই পলিটিকাল সাহিত্য প্রথমত আপাদমস্তক ফেনিল, তার পর সে সাহিত্য উথলে ওঠে অথচ তার ভিতর তাপ নেই, ফোস ফোস করে অথচ তার ভিতর প্রাণ নেই। সে সাহিত্য যে এতটা লােকপ্রিয় তার কারণ, ও ফেন গলাধঃকরণ করবার সময়, তােক্তার ভিতরটা ক্ষণিকের জন্য চিনচিন করে ওঠে, আর সে মনে করে জিনিসটা ভয়ঙ্কর অগ্নিবর্ধক। বলা বাহুল্য ও ধারণা একটা ভ্রান্তি মাত্র। অথচ আমাদের রাজনীতি, দেশের মনের অগ্নিমান্দ্যর অন্য