পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা কোনও টনিক অদ্যাবধি তৈরি করতে পারে নি। ও সাহিত্যের যা কিছু হেরফের সে শুধু ঐ দুই বস্তুর মাত্রা নিয়ে। আমাদের পলিটি- কসের যে দুদল হয়েছে তার কারণ এদের এক দলের সাহিত্যে সােডার ভাগ বেশী, আর এক দলের সাহিত্যে আসিডের। আজকের দিনে এ সাহিত্য যে রূপধারণ করেছে তাতে মানুষকে চাঙ্গা করা দূরে থাক, দ্বিগুণ দমিয়ে দেয়। এই রক্ত-সন্ধ্যার করাল আলােকে আমাদের সকল অক্ষমতা, সকল দৈন্য, আরও বেশী করে ফুটে উঠছে। অমনি আমাদের পলিটিকাল সাহিত্য, আমাদের দুরবস্থার ছবি নৈরাশ্যের কালীতে একে সকলের চোখের সুমুখে ধরে দিচ্ছে। আমাদের ইতিহাস যদি অন্যরূপ হত তাহলে আমরা যে অন্যরূপ হতে পারতুম, এই কথাটা নানাসুরে নানাছাদে বলা হচ্ছে, কিন্তু আমরা অন্যরূপ হলে যে আমাদের ইতিহাস অন্যরূপ হতে পারত, এমন কি এখনও হতে পারে, এ কথাটা চাপা পড়ে যাচ্ছে। ইতিহাস যে মানুষ গড়ে তা আমরা সকলেই জানি,—কিন্তু আমাদের এটাও জানা উচিত যে মানুষেও ইতিহাস গড়ে। এ সত্য যদি আমরা উপেক্ষা না করতুম, তাহলে ইতিহাস আমাদের গড়ত না, আমরা ইতিহাস গড়লুম। মানুষের জীবন কতক অংশে অদৃষ্ট ও কতক অংশে পুরুষকারের অধীন। যে সাহিত্য পুরুষকারের গুণ গায় তাই টনিক, আর যা অদৃষ্টের দোষ দেয় তাই আন্টি-টনিক। সুতরাং টনিক সাহিত্যের সন্ধানে আমাদের বর্তমানের দৈনিক সাহিত্যের বাইরে যেতে হবে। এবং আমরা ভারতবর্ষের অতীতের যত দূরদেশে যাব, তত বেশী টনিক সাহিত্যের সাক্ষাৎ পাব। বৈদিক সাহিত্যের সঙ্গে আমার বিশেষ পরিচয় নেই, কিন্তু সে