পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ, ১৩২৫ সাহিত্যের যে দুটি একটি বাণী আমার কানে এসে পৌঁচেছে তার তুল্য টনিক কথা ভূভারতে আর নেই। গায়ত্রী মন্ত্রের মত, আত্মার বল- কারক মন্ত্র বিশ্বসাহিত্যে দুর্লভ। ওর ভিতর কোনও রূপ ভিক্ষা, প্রার্থনা, দরবার, কি আবদারের নামমাত্র নেই। মানুষের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বরেণ্য বস্তু যে আলােক, বাইরের এবং ভিতরের, এ সত্য যদি আমরা বিস্মৃত না হতুম তাহলে আমাদের এ দুর্দশা হত । তার পর প্রাচীন যুগের আগাগােড়া সংস্কৃত সাহিত্য টনিক, তা সে ধর্মশাস্ত্রই হােক আর মােক্ষশাস্ত্রই হােক। গীতা যে, ক্ষুদ্র হৃদয় দৌর্বল্যের প্রশ্রয় দেয় না—তা সকলেই জানেন। মনুও যে দেন , তার পরিচয় মনুসংহিতার ষষ্ঠ অধ্যায়ে দেখতে পাবেন। সেকালে যিনি বাণপ্রস্থ অবলম্বন করতেন তার মহাপ্রস্থানের দুঃসাহিসকতার কথা কল্পনা করতেও আমাদের রােমাঞ্চ হয়। এমন কি, সংস্কৃত কামশাস্ত্রে যে কামের চর্চার কথা আছে তা করূতে পারে শুধু সেই লােক- যার হৃদয় পাষাণে আর দেহ ইস্পাতে গড়া। ও সাহিত্য অবশ্য টনিক নয়, একেবারে বিষবড়ি। হয়ত অনেকে বলবেন, এ সব শাস্ত্র সাহিত্যই নয়। তথাস্তু। অতঃপর সাহিত্যেই আসা যাক। মহাভারত যে টনিক এ বিষয়ে বােধহয় দ্বিমত নেই। রামায়ণ অবশ্য মহাভারতের সমশ্রেণীর কাব্য নয়। এ কাব্য আৰ্য- সভ্যতার সঙ্গে অনাৰ্য সভ্যতার সংঘর্ষের কাহিণী। এই সংঘর্ষে অবশ্য আৰ্যসভ্যতাই জয়ী হয়েছিল, কিন্তু এ কাব্যের অন্তরে উত্তরাপথের টনিক সভ্যতার সঙ্গে দক্ষিণাপথের অটনিক সভ্যতার স্পর্শের প্রথম