পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

URO সবুজ পত্ৰ 5િ, ૭૨૯ ( 文 ) সমসাময়িক সমাজের পথ্য হিসাবে বৰ্ত্তমান সাহিত্যকে বিচার এবং প্রচার করবার মত ভুল আর কিছুই হ’তে পারে না। সাহিত্য-আলোচনায় সেই ভুল আমরা নিয়ত কৰ্চিচ্ছ। রুগ্ন সমাজের দুর্বল পাকস্থলীর দিকে দৃষ্টি রেখে কখনো আমরা তার জন্যে রুটির ব্যবস্থা কাচ্ছ, কখনো আবার তার আশু বলাধানের জন্যে অথবা তার রুচি পরিবর্তন কল্পে লুচি সাধছি। সমাজ শরীরের পরে আমাদের এ সব সাহিত্যিক পরীক্ষা সে খুলি কাৰ্য্যকারী হচ্ছে এমনটি সন্দেহ করবার কোনো হেতু ত আমাদের চোখে পড়ে না । অ{সাদের বিশ্বাস, সমাজ সম্বন্ধে অতটা সচেতন হয়ে যা রচনা করা যায়ু, তা সাময়িক সামাজিক সন্দর্ভ হতে পারে, কিন্তু স্থায়ী সাহিত্যের পদগৌরব তার ভাগ্যে জোটে না। এ কথার প্রতিবাদ স্বরূপ বাঙলা ইংরাজী নানা দেশীয় নানা সাহিত্য মন্থন করে অনেক নজিরই অনেকে হয়ত এনে হাজির করতে পারেন । কিন্তু সে সকলের সঙ্গে আমার তথাকথিত “সামাজিকসাহিত্যের” বিস্তর প্রভেদ ! চাদের আলোর সাথে চাদির ঔজ্জ্বল্যের কি কোনো সাদৃশ্য সম্ভব ? প্রতিভাশালী সাহিত্য-রসিক চরিত্র সৃষ্টির পারিপাশ্বিক হিসেবে যখন সমাজ-চিত্ৰ অঙ্কনে প্ৰবৃত্ত হন, তখন তঁর বিশ্লেষণের পরদায় পরদায় তার নিজেরও অজ্ঞাতে, একটা অনায়ত্তের আভাস, একটা অনাগতের আহবান, একটা নবতর বিধানের ইঙ্গিত, স্বতই পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এই যে স্বাভাবিক সত্যানুভূতি এবং তাহার অতীব সহজ বিকাশ, এই হচ্ছে সাহিত্যের প্রাণ ; এই হচ্ছে তার চাদের আলো । সমালোচ্য সামাজিক-সাহিত্যে এই বস্তুটির একান্তই অভাব।