পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(S সবুজ পত্ৰ চৈত্র, ১৩২৫ প্ৰাচীন হ’ন না কেন, “আৰ্য্যামি’ জিনিষটি যে মনুষ্য-সমাজে তার চেয়ে ঢের বেশি প্রাচীন, তাতে বিন্দুমাত্ৰ সন্দেহ করা চলে না। বুৎপত্তি দিয়ে বস্তুনির্ণয়ের চেষ্টা করে শুধু এক বৈয়াকরণ ; এবং ও-জাতটি যে কাণ্ডজ্ঞানহীন একথা সর্ববাদীসম্মত । “আৰ্য্যামি হ’ল মানুষের সেই মনোবৃত্তির প্রকাশ ও বিকাশ, বিলাতী পণ্ডিতদের মতে যাতে ইত্যর প্ৰাণী থেকে মানুষ তফাত, অর্থাৎ তার ‘সেলফ কনশাসনেসাঁ ; আর দেশীতত্ত্বজ্ঞদের মতে যার সম্পূর্ণ বিনাশ, অথবা যা একই কথা-চরম বিকাশই হচ্ছে পরামুক্তির পথ, অর্থাৎ, অহংজ্ঞান। সমাজতত্ত্ববেত্তারা বলেন, মানুষ যে পরের মধ্যে নিজের সাদৃশ্য দেখে, তাতেই সে অপরের সঙ্গে সমাজ বেঁধে ঘর করতে পারে। এই সাদৃশ্যবোধ হ’ল সমাজবন্ধনের একটা পোক্ত শিকল। কিন্তু সবাই জানে ভিন্ন জিনিষের মধ্যে সাদৃশ্য জ্ঞানটা সাধারণ বুদ্ধির কথা। - সূক্ষমবুদ্ধির কাজ হচ্ছে একই রকম জিনিষের মধ্য থেকে তফাত বের করা । সুতরাং মানুষ যখন সুক্ষমবুদ্ধির জোরেই করে খাচ্ছে, তখন তার বুদ্ধির স্বাভাবিক ঝোঁকটা হ’ল পরের সঙ্গে নিজের সাদৃশ্য নিয়ে খুসি না। থেকে, এই মিলের মধ্যে অমিল কোন কোন জায়গায় তাই খুঁজে বের করার দিকে । আর এ খোজে কাকেও ব্যর্থ হতে হয় না । কেননা একে ত লাইবনিজ প্রমাণই করে” গেছেন যে, সংসারে দু’টি বস্তুর - ঠিক এক রকম হবার কোনও জো-ই নেই ; আর লাইবনিজ ছিলেন একজন দিগগজ গণিতজ্ঞ লোক । তার পর সবাই নিজকে জানে সাক্ষাৎ ভাবে, অন্য সকলকে পরোক্ষে । আমার বুদ্ধি আমার কাছে স্বপ্ৰকাশ, অন্যের বুদ্ধি আছে কি নেই, সেটা অনুমানের কথা। কাজেই আমি যে অন্য সকলের চেয়েই ভিন্ন রকমের, এবং মোটের