পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

go সবুজ পত্ৰ চৈত্র, ১৩২৫ স্বাধীনতার ক্ষমতার উপর যার ভিত্তি হ’ল দেহের ও মনের শক্তি । এ কথা খুব নিৰ্ভয়েই বলা চলে যে, অনেক জাতির লোক রয়েছে স্বাধীনতার কল্পনাও যাদের অজ্ঞাত। সেইজন্য দাসত্ব কি প্ৰভুত্ব দুই অবস্থাই তাদের সমান। যতটুকু উন্নতি তাদের সম্ভব, অবস্থাভেদে তার কোনও প্ৰভেদ ঘটে না। ঈহুদি, চীনা, সেমিটিক ও অৰ্দ্ধসেমিটিক জাতিগুলি এর দৃষ্টান্ত।” উপরের বর্ণনায় আৰ্যজাতির আধিপত্য-দাবীর অংশটা, অর্থাৎ এ ন্যায়ের প্রতিজ্ঞাটি, প্ৰসিদ্ধ লেখক হাউষ্টন চেম্বারলেইনের “উনবিংশ শতাব্দীর ভিত্তি’ নামক অপূর্ব গ্ৰন্থ থেকে অনুবাদ করে? দিয়েছি। চেম্বারলেইন জাতিতে ইংরেজ, শিক্ষায় জাৰ্ম্মান ; এবং তঁর পুথি রচনা করেছেন জাৰ্ম্মানভাষায় । যারা চেম্বারলেইন-এর মতামতের খুব সদয় । সমালোচক নন তঁরাও স্বীকার করেছেন যে, র্তার হাতের কলম হ’ল সোনার কাঠি । বস্তুত সে কলম যে সলীল ও স্বচ্ছন্দ গতিতে প্ৰাচীন ও আধুনিক য়ুরোপীয় সভ্যতার বিচিত্র ইতিহাসের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে, তাতে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। তার গ্রন্থের প্রায় প্রতি পৃষ্ঠা থেকে যে রসজ্ঞতা ও সূক্ষবিশ্লেষণ, শ্রদ্ধা ও ঘূণা, অনুরাগ ও বিদ্বেষের তীব্ৰ আলো ঠিকরে পড়ছে তাতে অল্প-বিস্তর চোখ না-বািলসে যায় না। কিন্তু আৰ্যজাতির পক্ষে এই যে সর্বাধিপত্যের দাবী, যা তঁর পুথিতে গোড়া থেকে শেষ পৰ্য্যন্ত বারবার উপস্থিত করা হয়েছে, এর কদৰ্য্যতা ও ভীষণতা চেম্বারলেইন-এর কলমের কালিতেও একটুকও ঢাকা পরে নি। কেননা এর পাণ্ডিত্যের পোষাক আর যুক্তির মুখোস খুলে ফেললে যা বেরিয়ে পরে, সে হচ্ছে আদিম নগ্ন বর্বরতা, যা নিজের