পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র জ্যৈষ্ঠ, ১৩২০ নয়। আর সেই ভিন্ন ভিন্ন মূল হইতেই আমাদের বর্তমান শিক্ষা- প্রণালী লইয়া নানা মতভেদের শাখা, কখনও পাতা কখনও কাটা মেলিতেছে। এ দেশের শিক্ষা লইয়া যাহারা চিন্তা করেন এবং চিন্তা না করলেও কথা বলেন তাদের মধ্যে সব চেয়ে প্রবল পৰু হইলেন দেশশাসক আমলাতন্ত্রের সভ্যেরা, এবং তাহাদেরি জ্ঞাতি কুটুল ভারতপ্রবাসী ব্রিটিশ বণিক সম্প্রদায়। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি দানের দরবারে, স্কুলের পুরস্কার বিতরণ সভায়, নিজেদের ভােলের মজলিসে আমাদের শিক্ষার গলদ যে কোথায় তা বেশ স্পষ্ট কথাতেই ব্যক্ত করেন। তাঁরা বলেন এই যে, বাঙ্গালীর ছেলেরা সেক্সপীয়র মিন্টন পড়িতেছে, বার্ক মিল মুখস্থ করিতেছে, লিবিগ ফ্যারাডের তত্ত্ব ঘটিতেছে, এসব একবারে নিরর্থক ও নিফল। এসব ছেলেরা ত স্কুল কলেজ হইতে বাহির হইয়া ওকালতি ডাক্তারির বাজারে ভিড় করিবে, না হয় মুনসেফী ডিপুটীগিরির উমেদারীতে ফিরিবে, আর অধিকাংশই সরকারী ও সওদাগরী আফিসের কেরাণীগিরিতে ভর্তি হইবে। ইহাদের জন্য এ শিক্ষা কেন ? ধান কলাই যার লক্ষ্য সে কেন গােলাপের কেয়ারীতে পরিশ্রম করে। অর্থাৎ দেশব্যাপী ব্যবহার ও বাণিজ্যের যে কল চলিতেছে, তার চাকা গুলিকে স্বচ্ছন্দে ও বিনা বাধায় চালাইয়া লইবার মত মজুর, মিস্ত্রী, বড় জোর ফোরম্যান মিকানিকের উপযােগী যে শিক্ষা, তাহাই হইল বাঙ্গালীর যথেষ্ট এবং যথার্থ শিক্ষা। ইহার জন্য ‘স্যামসন ফ্ল্যাগনিষ্টেশের সৌন্দৰ্য্য ও গান্তীর্ষের অনুশীলন প্রয়ােজন হয় না; বড় সাহেবের মনঃপুত চলতি ইংরেজিতে কাজের চিঠি মুবিদা করিতে জানাটাই