পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বধ, বিতীয় সংখ্যা বাঙ্গালীর শিক্ষা বেশী দরকার। আর সেই পত্র রচনায় মিণ্টনের ভাষা কোনও সাহায্য ত করেই না, বরং বিদেশীকে বিপথেই লইয়া যায়। সুতরাং আমাদের স্কুল কলেজের প্রচলিত শিক্ষা যেমন অনুপযােগ তেমনি ফালতো। আর শিক্ষার এই বাহুল্যটা যদি কেবল নিফলই হইত তবুও সে এক রকম ছিল। কিন্তু ইহার কিছু ফলও ফলে, এবং আশঙ্কার কথা এই যে ফলটা সমস্তই কুফল। পশ্চিমের সাহিত্য বিজ্ঞান, দর্শণ ইতিহাস মুখস্থ করিয়া পূব দেশের লােকদের মাথা ঠিক থাকে না। পশ্চিম যে পশ্চিম এবং পূর্ব যে পূব এই সাধারণ জ্ঞানটাও লােপ হয়। এবং যে সকল দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক তত্ত্বকথা পশ্চিমের পণ্ডিতেরা পশ্চিম দেশের জন্যই প্রচার করিয়াছেন এই অত্যন্ত পূব দেশেও এর হাতে কলমে সে গুলির প্রয়োগ দেখিতে চায়। এই সকল তত্ত্ব কথায় ‘মানুষ’ শব্দের অর্থ যে পশ্চিম দেশীয় শ্বেতবর্ণের মানুষ এ সহজ কথাটা ইহারা বুঝিতে পারে না। যতই কেন জিয়গ্রাফি মুখস্থ করুক না ল্যাটিচুড লঙ্গিচুডের জ্ঞানটা ইহাদের কিছুতেই পাকা হয় না। ফলে নিজেদের অবস্থায় ইহারা অসন্তুষ্ট হইয়া উঠে। এমন কি যে শাসকসম্প্রদায় এই দেড়শ বছর ধরিয়া নিশ্চল শান্তির মধ্যে পূর্ব দেশের লােকদের পক্ষে যতটা সম্ভব ইহাদিগকে সেই উন্নতির পথে অতি সন্তর্পণে, সতর্ক পদক্ষেপে ধীরে ধীরে হাত ধরিয়া লইয়া চলিয়াছেন, তাঁহাদের উপরেও ইহারা ক্ষণে ক্ষণে বিরাগের ভাব দেখায় ; উন্নতির গতি মন্থরতায় অসহিষ্ণু হইয়া মনে করে ছাড়া পাইলে বুঝি আরও একটু দ্রুত চলিতে পারে। এবং শাসনের কাটা যে নিজের ইঞ্জিনিয়ার হইয়া চালাইতেও বা পারে এমন কানাও ইহাদের মনে আসিয়াছে। এমন কি কলটা এ রকম না