পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা, দ্বিতীয় সংখ্যা বাঙ্গালীর শিক্ষা নাই। বাঙ্গলাদেশ দেখিতে দেখিতে শিল্পশালয় ও বাণিজ্যাগারে ভরিয়া উঠিবে এমন দুরাশার কোনও সঙ্গত কারণ নাই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা দিতে পারে, কিন্তু সে শিক্ষাকে সফল করিবার উপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে সে শিক্ষার সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে দেশের লােকের, হয়ত বা দেশের রাজার উদ্যম বা নিশ্চেষ্টতার উপর। বাঙ্গলার অন্ন সমস্যার জন্য দায়ী তার প্রচলিত শিক্ষা নয় ; এবং কেবল শিক্ষার বদল ঘটাইয়া সে সমস্যার পুরণও সম্ভব নয়। বেশ মনে আছে যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি, এস, সি পড়াইবার প্রথম আয়োজন হয় তখন অনেকে ভাবিয়াছিলেন যে আর ভাবনা নাই। এই সব বিজ্ঞানে-কৃতবিদ্য ছেলেরা দেশে বৈজ্ঞানিক শিল্পের প্রতিষ্ঠা করিয়া অন্নাভাবের একটা কিনারা করিবে। আজ এম, এস, সি ; বি এ এ বাঙ্গলার সব উকীল লাইব্রেরী ভর্তি হইয়া উঠিল। ছেলেরা বিজ্ঞান শিখিল বটে, কিন্তু সে শিক্ষাকে দেশের সমাজ ও দেশের রাষ্ট্র কাজে লাগাইবার কোনও ব্যবস্থাই করিতে পারিল না। তারপর শেষ কথা কিন্তু সব চেয়ে যেটা বড় কথা, তা এই। উচ্চ শিক্ষায় যার অধিকার আছে তাকে সে শিক্ষা হইতে বঞ্চিত করার অধিকার সমাজ বা রাষ্ট্র কাহারও নাই। এখানে উচ্চ শিক্ষিতের জীবিকা উপার্জনের পথে বিবাহুল্যের কথা তােলা নিষ্ফল, কেননা জীবিকার অধিকারের চেয়ে এ অধিকারের দাবী কিছু কম নয়। কাজেই সে পথের মাপে উচ্চ শিক্ষার ইচ্ছামত প্রসার বা সংকোচ ঘটান চলে না। কথা এই, আর কোনও ফল বা নিস্ফলতার প্রমাণে উচ্চ শিক্ষার বিচার হয় না; ঐ শিক্ষাই সে শিক্ষার চরম ফল। কেরাণীরও উচ্চশিক্ষা বিফল নয়, যদিও কেরাণীগিরিতে তা কাজে