পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা বাঙ্গালীর শিক্ষা তাহার অনুসন্ধান করিলে, কথার হেরফের বাদে যাহা বাহির হইয়া পড়ে তাহা এই ; পূৰ্ব্বকার দিনে ইংরেজি, অর্থাৎ ইংরেজি ভাষা শিক্ষাটা যেমন পাকা রকমের হইত এখনকার ছেলেদের ইংরেজি শিক্ষা তার কাছেই ঘেঁসিতে পারে না। তখন শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শব্দ শিখিবার অন্য অভিধান মুখস্থ করিত, ‘গ্রামার’ ‘ইডিয়ামে’ নিভূল হইবার জন্য প্রাণ পৰ্যন্ত পণ করিত, ষ্টাইল’ দোরস্ত করিবার জন্য বেজনসন হইতে স্যামুয়েল জনস পর্যন্ত কারাে লেখাই কণ্ঠস্থ করিতে বাকী রাখিত । আর ফলও ফলিত চেষ্টার অনুরূপ। এই সব কৃতবিদ্য লােকের মুখের ইংরেজি শুনিয়া বড় বড় সাহেবদেরও চমক লাগিত; নাম না দিয়া খবরের কাগজে লেখা বাহির করিলে বাঙ্গালীর লেখা না সাহেবের লেখা এ লইয়া তর্ক উঠিত। আর আজ দুই ছত্র নির্ভূল ইংরেজি লিখিতে বি এ পাশ ছেলে গলদঘর্ম হইয়া উঠে। শিক্ষার অবনতি আর বলে কাকে। উঁচুদরের ইংরেজি শেখাই উচ্চশিক্ষা কি না এ প্রশ্ন তােলা অবশ্য নিরর্থক। কেননা সে সম্বন্ধে এদের মনে বিন্দুমাত্রও দ্বিধা নাই। তবে খুব চাপাচাপি করিয়া ধরিলে এদের মধ্যে কেহ কেহ সংশয়ীদের একবারে নিরুত্তর করিবার জন্য এই শিক্ষার দুই একটা অবান্তর মাহাত্ম্যও কীৰ্ত্তণ করেন। তারা বলেন আমাদের বর্তমানে যা কিছু উন্নতি তার মুলই ত ঐ ইংরেজি অর্থাৎ ইংরেজি ভাষা শিক্ষা, এবং ঐ ভাষাই হইল বিচ্ছিন ভারতবর্ষের ঐক্যসূত্র। কিন্তু ইহার পরেই কোন ইংরেজি ইতিহাস আগাগােড়া মুখন্যের উপর বক্তার বর্তমান পাণ্ডিত্য খ্যাতির ভিত্তি প্রতিষ্ঠা, এমনি গম্ভীরভাবে সে কথার শুরু হয় ১১