পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব, দ্বিতীয় সংখ্যা বাঙ্গালীর শিক্ষা 3 ইহাকে সত্যভাবে গ্রহণ করিতে হইলে যে ইহাকে বহন করিতে জানিতে হয়, ইহাকে সৃষ্টি করিতে না জানিলে যে ইহাকে আপনও করা যায় না এ কথা তখন বাঙ্গালীর মনে হয় নাই ; মনে হইবার কথাও নয়। সে দিন ইংরেজি শিক্ষা দেশের মধ্যে আসিয়াছিল দেবতার দানের মত। আমরা ভাবিয়াছিলাম ইহাকে স্বীকার করিয়া ঘরে তোলার নামই অমৃতত্বের অধিকার। এ যে স্বর্গের মন্দাকিনী নয় পাতালের ভােগবতী, ইহাকে যে মাটি খুঁড়িয়া তুলিতে হয়, আর যে মাটি খুঁড়িতে না জানে ইহা যে তার কাছে অমৃত নয়, কেবলই তোলা জল, কখনও ঘােলা কখনও কিছু নিৰ্ম্মল, সে কথা বুঝিবার তখনও সময় হয় নাই। তাই যে শিক্ষার লক্ষই হইল অন্যের আবিষ্কৃত জ্ঞান, অন্যের সৃষ্ট রস, অন্যের আহৃত বিদ্যা কেবলি নিশ্চেষ্ট ভাবে গ্রহণ করান, তাহাকেও আমরা পরম সমাদরে সমস্ত মন দিয়া বরণ করিয়া লইলাম। কিন্তু বিধাতার আশীর্বাদে এ শিক্ষাতেও বাঙ্গালীর মন বেশী দিন নিশ্চেষ্ট থাকিল না। আমাদের মনের যে অংশটা পূর্ব হইতেই সচল ছিল, সেই ভাষা ও সাহিত্যের দিক, এই নূতন শিক্ষা ও ভাবের স্পর্শে নব বসন্তের সাড়া দিল। নব-যুগের অভিনব ভাব প্রকাশের উপযােগী শক্তিশালী, সৌন্দর্যময় ভাষা আমরা গড়িয়া তুলিলাম। বালার নবীন সাহিত্য আমাদের আশা ও আকাঙক্ষা প্রকাশ ও পুষ্ট করিতে লাগিল। তবুও এই সাহিত্যকে পরীক্ষা করিলেই নূতন শিক্ষা প্রণালীর অবশ্যম্ভাবী ফল হাতে হাতে ধরা পড়ে। দেখা যায় কাব্য ও রসসাহিত্যবাদে এ সাহিত্যের বেশীর ভাগই অনুবাদ ও সঙ্কলনের সাহিত্য। যে তৈরী ভাব ও চিন্তা ইংরেজি ভাষার সঙ্গে সঙ্গে বাঙ্গালীর কাছে আসিয়াছে তাহাকেই বাঙ্গলা পােবাকে দেশের কাছে