পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গরুর পর জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ কোনও কষ্ট ছিল না, সুতরাং সে যুগের কথা ছেড়ে দেওয়া যাক। কিন্তু এই যে পঞ্চাশ ষাট বৎসর পূর্বে এ প্রথার ততটা চল ছিল না তার কারণ কি? যতদূর আমার মনে হয় এর প্রধান কারণ দুইটি প্রথম খাদ্যদ্রব্যের প্রচুরতা, দ্বিতীয় বাল্যবিবাহ। সেকালে বিবাহের সময় স্বামীকে ভাবতে হত না যে সে স্ত্রীপুত্ৰাদিকে খাওয়াবে কি করে, আর কন্যার পিতাকেও ভাবতে হত না যে জামাতা যদি উপার্জন না করেন তা হলে পুত্রা আর পৌত্রাদির খাওয়ার কি ব্যবস্থা হবে। খাওয়া পরার অভাব না থাকায় সহজেই বাল্যবিবাহ প্রচলিত হবার সুযােগ উপস্থিত হ’ল; এবং বালকবালিকা-বিবাহ চলিত হওয়ার দরুণ বর অপেক্ষা বরের ঘরের খবরের আবশ্যকতা বেশী হ’ল এবং বরের বিছা অপেক্ষা স্বাস্থ্যটা বেশী লক্ষ্যের বিষয় হ’ল। জাতিকুল মাপ- কাটি হওয়াতে সমাজে বর কন্যার দর ছেলে মেয়ে হিসাবে সমান ছিল বিবাহের বাজারে ছেলে বলে বরের বিশেষ একটা মূল্য ছিল না এবং বাহ দিয়ে স্বচ্ছন্দে তাকে ও তার ছেলেমেয়েদের খাওয়াবার সামর্থ্য থাকার জন্য, কন্যার পিতার নিকট কন্যার জন্ম পাপের ভােগ বলে মনে হত না। ছেলেবেলাতে ছেলেমেয়ের বিবাহ হয়ে গেল, তারপর যার কপালে যে ছেলে যেমন কৃতী হল। কারও স্বামী বা মুখ হ’ল, কারও স্বামী বা পণ্ডিতগণ্য হ’ল। কোনও কালে কোনও দেশের স্ত্রীপুরুষের সংখ্যায় যে বিশেষ বৈষম্য আছে তা মনে করা ভুল-হয়ত বিশেষ কারণবশতঃ সাময়িক কিছু প্রভেদ থাকতে পারে কিন্তু অচিরেই তা স্বাভাবিক অবস্থা প্রাপ্ত হয়। অন্ততঃ আমার মনে হয় না, যে বাংলাদেশে এই সব অসুবিধার হেতু, ছেলেমেয়ের সংখ্যার বৈষম্য। বহুবিবাহ যখন প্রচলিত ছিল তখন স্ত্রীলোকের