পূর্ব্ব ও পশ্চিম
ভারতবর্ষের ইতিহাস কাহাদের ইতিহাস?
একদিন যে শ্বেতকায় আর্য্যগণ প্রকৃতির এবং মানুষের সমস্ত দুরূহ বাধা ভেদ করিয়া ভারতবর্ষে প্রবেশ করিয়াছিলেন; যে অন্ধকারময় সুবিস্তীর্ণ অরণ্য এই বৃহৎ দেশকে আচ্ছন্ন করিয়া পূর্ব্বে পশ্চিমে প্রসারিত ছিল তাহাকে একটা নিবিড় যবনিকার মত সরাইয়া দিয়া ফলশস্যে বিচিত্র, আলোকময়, উন্মুক্ত রঙ্গভূমি উদ্ঘাটিত করিয়া দিলেন, তাঁহাদের বুদ্ধি, শক্তি ও সাধনা একদিন এই ইতিহাসের ভিত্তিরচনা করিয়াছিল। কিন্তু একথা তাঁহারা বলিতে পারেন নাই যে, ভারতবর্ষ আমাদেরই ভারতবর্ষ।
আর্য্যরা অনার্য্যদের সঙ্গে মিশিয়া গিয়াছিলেন। প্রথম যুগে আর্য্যদের প্রভাব যখন অক্ষুণ্ণ ছিল তখনো অনার্য্য শূদ্রদের সহিত তাঁহাদের প্রতিলোম বিবাহ চলিতেছিল। তারপর বৌদ্ধযুগে এই মিশ্রণ আরো অবাধ হইয়া উঠিয়াছিল। এই যুগের অবসানে যখন হিন্দুসমাজ আপনার বেড়াগুলি পুনঃসংস্কার করিতে প্রবৃত্ত হইল এবং খুব শক্ত পাথর দিয়া আপন প্রাচীর পাকা করিয়া গাঁথিতে চাহিল, তখন দেশের অনেক স্থলে এমন অবস্থা ঘটিয়াছিল যে, ক্রিয়াকর্ম্ম পালন করিবার জন্য বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ খুঁজিয়া পাওয়া কঠিন হইয়াছিল; অনেক স্থলে ভিন্নদেশ হইতে ব্রাহ্মণ আমন্ত্রণ করিয়া আনিতে হইয়াছে, এবং অনেক স্থলে রাজাজ্ঞায় উপবীত পরাইয়া ব্রাহ্মণ রচনা করিতে হইয়াছে একথা প্রসিদ্ধ। বর্ণের যে শুভ্রতা লইয়া একদিন আর্য্যরা গৌরব বোধ করিয়াছিলেন সে শুভ্রতা মলিন হইয়াছে; এবং আর্য্যগণ শূদ্রদের সহিত