সমাজ یابع দন্তহীন হাসিটুকু আমার বড় মিষ্ট লাগে। কিন্তু তোমার দন্তহীন দংশন আমার তেমন উপাদেয় বলিয়া বোধ হয় না। তোমাদের কালের সবই ভাল, আমাদের কালে সবই মন্দ, এইটি তুমি প্রমাণ করিতে চাও। দু-একটা কথা বলিবাব আছে ; তাহাতে যদি তোমাদের আদবকায়দাব কোনো ব্যতিক্রম হয় তবে আমাকে মাপ করিতে হইবে । আমরা যাহা করি তাহা তোমাদের চক্ষে বেয়াদবী বলিয়া ঠেকে, এই জন্তই ভয় হয়। তোমবা চোখে কম দেখ কিন্তু নীতিদের একটি সামান্ত ক্রটি চষমা না লইয়াও বেশ দেখিতে পাও । যে লোক যে-কালে জন্মগ্রহণ করে সে-কালের প্রতি তাহার যদি হৃদয়ের অনুবাগ না থাকে তবে সে-কালেব উপযোগী কাজ সে ভাল কবিয়া করিতে পারে না। যদি সে মনে করে, যে-কাল গেছে তাহাই ভাল, আব আমাদের কাল অতি হেয়, তবে তাহার কাজ কবিবাব বল চলিয়া যায়, ভূত কালের দিকে শিয়র করিয়া সে কেবল স্বপ্ন দেখে ও দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে এবং ভূত-ত্ব প্রাপ্ত হওয়াই সে. একমাত্র বাঞ্ছনীয় মনে করে। স্ব-দেশ যেমন একটা আছে, স্ব-কালও তেমনি একটা আছে। স্বদেশকে ভাল না বাসিলে যেমন স্বদেশের কাজ করা যায় না, তেমনি স্ব-কালকেও ভাল না বাসিলে স্ব-কালেব কাজও করা যায় না । যদি ক্রমাগতই স্বদেশের নিন্দা করিতে থাক, স্বদেশের কোনো গুণই দেখিতে না পাও, তবে স্বদেশের উপযোগী কাজ তোমার দ্বাবা ভালরূপে সম্পন্ন হইতে পারে না। কেবলমাত্র কর্তব্য বিবেচনা করিয়া তুমি স্বদেশের উপকার করিতে চেষ্টা করিতে পার, কিন্তু সে-চেষ্টা সফল হয় না । তোমার হৃদয়হীন কাজগুলো বিদেশী বীজের মত স্বদেশের জমিতে ভাল করিয়া অঙ্কুরিত হইতে পারে না । তেমনি স্ব-কালের যে কেবল দোষই দেখে কোনো গুণ দেখিতে পায় না, সে চেষ্টা করিলেও স্ব-কালের কাজ ভাল করিয়া করিতে পারে না। এক হিসাবে সে নাই বলিলেও হয় ;
পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।