চিঠিপত্র ԵՖ সমাজের সেক্রেটরী অমুক অতএব সে-সমাজে আমার থাকা শোভ পায় না আমবা কেবল এই ভাবিয়াই মরি। সুপারিসের খাতির এড়াইতে পাবি না, চক্ষুলজ্জা অতিক্রম করিতে পারি না। আমার একটা কথা অগ্রাহ হইলে সে অপমান সহ করিতে পারি না । ফুর্ভিক্ষ নিবাবণেব উদ্দেশু্যে কেহ যদি আমার সাহায্য লইতে আসে, আমি পাঁচ টাকা দিয়া মনে করি তাহাকেই ভিক্ষা দিলাম, তাহাকেই সবিশেষ বাধিত করিলাম, সে এবং তাহার উদ্ধতন চতুদশ সংখ্যক পূৰ্ব্বপুরুষের নিকট হইতে মনে মনে কৃতজ্ঞতা দাবী করিয়া থাকি। নহিলে মনের তৃপ্তি হয় না—কোনো ব্যক্তিবিশেষকে বাধিত করিলাম না —আমি রহিলাম কলিকাতার এক কোণে, বীরভূমের এক কোণে এক ব্যক্তি আমার টাকায মাসখানেক ধরিয়া দুই মুঠ ভাত খাইয়া লইল— ভাবি ত আমার গবজ! পরোপকারী বলিয়া নাম বাহির হয় কার ? যে ব্যক্তি আশ্রিতদের উপকার কবে অর্থাৎ, এক জন আসিয়া কহিল— মহাশয় আপনাব হাত ঝাড়িলে পৰ্ব্বত, আপনি ইচ্ছা করিলে অনায়াসে আমার একটা গতি করিতে পারেন—আমি আপনাদেরই আশ্রিত ; মহামহিম মহিমাণৰ অমনি অবহেলে গুড়গুড়ি হইতে ধূমাকৰ্ষণপূর্বক অকাতরে বলিলেন—“আচ্ছা!” বলিয়া পত্ৰযোগে একজন বিশ্বাসপরায়ণ বান্ধবের ঘাড়ে সেই অকৰ্ম্মণ্য অপদার্থকে নিক্ষেপ করিলেন। আর একজন হতভাগ্য অগ্রে তাহার কাছে না গিয়া পাচু বাবুর কাছে গিয়াছিল, এই অপরাধে তাঁহাকে কাণ কড়ি সাহায্য করা চুলায় যাক, বাক্যযন্ত্রণায় তাহাকে নাকের জলে চোখের জলে করিয়া তবে ছাড়িয়া দিলেন। আপনার স্থল উদরটুকু ধারণ করিয়া এবং উদরের চতুষ্পার্শ্বে সহচর অনুচরগণকে চক্রাকারে আকর্ষণ করিয়া লইয়৷ যে-ব্যক্তি বিপুল শনিগ্রহের মত বিরাজ করিতে থাকে আমাদের এখানে সে-ব্যক্তি একজন মহৎ লোক। উদারতার সীমা উদরের চারি পাশ্বের মধ্যেই
পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।