পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
অনাবশ্যক।

পার হইতে চাও, সেই ইংরাজ মহাপুরুষেরা কি করেন একবার দেখ না। তাহাদের রাজসভায়, তাহাদের পার্ল্যামেণ্ট সমিতিতে, এবং অন্যান্য নানা স্থলে কতশত প্রকার অর্থহীন অনুষ্ঠান প্রচলিত আছে, তাহা কে না জানে!
 অতীত কাল ধরণীর মত আমাদের অচলপতি করিয়া রাখে। কখন বাহিবে রৌদ্রের খরতর তাপ, আকাশ হইতে বৃষ্টি পড়ে না, তখন শিকড়ের প্রভাবে আমরা অতীতের অন্ধকার নিম্নতন দেশ হইতে রস আকর্ষণ করিতে পারি। যখন সকল সুখ শুকাইয়া গেছে তখন আমরা পিছন ফিরিয়া অতীতের ভগ্নাবশিষিষ্ট চিহ্ন সকল অনুসরণ করিয়া অতীতে যাইবার পথ অনুসন্ধান করিয়া লই। বর্ত্তমানে যখন নিতান্ত দুর্ভিক্ষ, নিতান্ত উৎপীড়ন দেখি তখন অতীতের মাতৃক্রোড়ে বিশ্রাম করিতে যাই। বাঙ্গালা সাহিত্যে যে এত পুরাতত্ত্বের আলোচনা দেখা যাইতেছে, তাহার প্রধান কারণ আমাদের একমাত্র সান্ত্বনার স্থল অতীতকালকে জীবন্ত ধরিয়া তুলিবার চেষ্টা হইতেছে। সে পথও যদি কেহ বন্ধ করিতে চায়, অতীতের যাহা কিছু অবশেষ আমাদের ঘরে ঘরে পড়িয়া রহিয়াছে তাহাকে দূর করিয়া যদি কেহ অতীতকে আরও অতীতে দেখিতে চায় তবে সে সমস্ত জাতির অভিশাপের পাত্র হইবে।
 যদি আমরা অতীতকে হারাই তবে আমরা কতখানি হারাই! আমাদের যতটুকু প্রাণ থাকে। একটি নিমেষ মাত্র লহরী কিসের সুখ! আমাদের জীবন যদি কতকগুলি বিচ্ছিন্ন জলবিন্দু হয় তবে তাহা অত্যন্ত দুর্ব্বল জীবন। কিন্তু আমাদের জীবনের