সমাজের বর্ত্তমান বিপ্লবের অবস্থায় কোন্ কাজটা সমাজের পক্ষে সর্ব্বতোভাবে উপযোগী, কেন্টা নয়, তাহা নিঃসংশয়ে বলা যায় না।
বঙ্গনারীদের মুখপদ্ম যদি দুর্ভাগা সূর্য্যের তৃষিত নেত্রপথের অন্তরাল করাই অভিপ্রেত হয় তবে বর্ত্তমান বঙ্গসমাজে তাহার কতকগুলি বাধা পড়িয়াছে, আমি তাহাই দেখিতে চাই। একটা দৃষ্টান্ত দেখিলেই আমার কথা স্পষ্ট হইবে। প্রাচীন কালে দেশ-বিদেশে যাতায়াতের তেমন সুবিধা ছিল না – ব্যয় অধিক এবং পথে বিপদও অনেক ছিল। এই জন্য তখনকার রীতি ছিল “পথে নারী বিবর্জ্জিতা “। এই জন্য পুরাকালের পথিকগণের বধূজন-বিলাপে কাব্য প্রতিধ্বনিত হইত। কিন্তু এখন সময়ের পরিবর্ত্তন হইয়াছে। রেলের প্রসাদে পথ সুগম হইয়াছে, পথে বিপদও নাই। দেশে বিদেশে বাঙ্গালীদের কাজ কর্ম্ম হইতেছে। যখন পথ সুগম, ব্যয় অল্প, কোন বিপদ নাই, তখন স্ত্রীপুত্রের বিরহ কাহারও সহ্য হয় না। কিন্তু রেলের এক-একটি গাড়ি একলা অধিকার করিতে পারেন এমন সঙ্গতিও অল্প লোকের আছে। এই জন্য আজকাল প্রায় দেখা যায় পরপুরুষদিগের সহিত একত্রে উপবেশন করিয়া অনেক ভদ্রলোকের পরিবার রেল-গাড়িতে যাত্রা করিতেছেন। উত্তরোত্তর এরূপ উদাহরণ আরও বাড়িতে থাকিবে। ইহা নিবারণ করা অসাধ্য। নিয়মের গ্রনিথ দুই-চারিবার খুলিয়া ফেলিলেই তাহা শিথিল হইয়া যায়। বিশেষতঃ অনভ্যাসের সঙ্কোচ যত গুরুতর, নিয়মের আঁটাআঁটি তত গুরুতর নহে। অন্তঃপুর হইতে বাহির হইবার অনভ্যাস যদি অল্পে অল্পে হ্রাস হইয়া যায়, তাহা হইলে সমাজনিয়মের বাধা আর বড় কাজে লাগে না। আর একটা দেখিতে