পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তার্কিক
১৫

পদার্থে ঢেউ উঠিলে আমলা যে আলো দেখিতে পাই, ইহার যুক্তি কি? এ দুইটি ঘটনার মধ্যে যোগ কোথায়? আমাদের মস্তিস্কের কতকগুলি পরমাণু ঘোরার সঙ্গে, আমাদের স্মৃতির, ভাবনার, মনোবৃত্তির কি যোগ থাকিতে পারে? এমন কি কার্য্যকারণশৃঙ্খলা আছে, যাহার পদে পদে missing links নাই? এইত তোমার যুক্তি! এই তৃণটি ধরিয়া তুমি অনন্ত নামক অকুল অতলস্পর্শ সমুদ্রে কি বলিয়া ভাসিতে চাও; যুক্তির গোটাকতক কাজ আছে তার আর ভুল নাই, কিন্তু তাই বলিয়া ঐ দাম্ভিকটা যে যেখানে সেখানে মোড়লা করিয়া বেড়াইবে সে কাহাল প্রাণে সয়? তার নিজের কাজই ঢ়ের বাকি পড়িয়া আছে, পরের কাজে ব্যাঘাত করিয়া সময় নষ্ট করিবার অবশ্যক?

 জগতো যেমন একদিকে সাম্য, অন্যদিকে অনন্ত, একদিকে তীর আর একদিকে সমুদ্র, আমাদের মনেরও তেমনি একদিকে সীমা আল একদিকে অসীম, সীমার রাজ্যে যুক্তির শাসন, অতএব সে রাজ্য যুক্তির শাসন লঙ্ঘন করিলে পদে পদে তাহার ফল ভোগ করিতে করিতে হয়, কিন্তু যখনি অসীমের রাজ্যে পদার্পণ করিলাম, তখনি আমরা আর যুক্তির প্রজা নহি, অতএব হে বন্ধু, হে তার্কিক, আমি যখন অসীমের রাজ্যে আছি তখন আমাকে যুক্তির আইনের ভয় দেখাইলে আমি মানিব কেন?

 তাই বলিতেছি, তুমি যে কথায় কথায় আমার সঙ্গে তর্ক করিতে আইস, সেটা আমার ভাল লাগে না, এবং তাহাতে কোন কাজও হয় না। তুমি আমি একত্র থাকাটাই অযৌক্তিক, কারণ, তোমাতে