পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বিজ্ঞতা
২৩

বিদ্যমান। এই জন্য সৎকার্য্যের নাম শুনিলেই ইহাঁদের সংশয়কুঞ্চিত অধরৌষ্ঠের চারি দিকে পাণ্ডুবর্ণ মড়কের মত একটা বিষাক্ত হাসি ফুটিয়া ওঠে। অতিবুদ্ধিমান জীবের সম্মুখের দাঁতের পাটিতে যে একটা দারুণ হাস্যবিষ আছে, হে জগদীশ্বর, সেই বিষ হইতে পৃথিবীর সমুদয় সৎকার্য্যকে রক্ষা কর। ইহারা যখন পরস্পর টেপাটিপি করিয়া বলিতে থাকেন “এই লোকটার মৎলব বুঝিয়াছ? কেবল আমাদের খোশামোদ করা “বা “অমুকের নিন্দা করা “বা “সাধারণের কাছে নাম পাইবার প্রয়াস”–তখন সৎলোকের জীবনের মূলে গিয়া কুঠারঘাত পড়ে, তাহার সমস্ত জীবনের আশা ম্রিয়মাণ হইয়া যায়।

 সকল কাজ সকল বিষয় হইতেই একটা গূঢ় মৎলব বাহির করিবার চেষ্টা অনেক কারণে হইয়া থাকে। প্রথমতঃ কেহ কেহ এমন আত্মাভিমানী আছে যে, নিজেকেই সমস্ত কথা সমস্ত কাজের লক্ষ্য মনে করে। সমস্ত জগৎ যেন তাহার দিকেই আঙুল বাড়াইয়া আছে। সে যে কথা শুনে, আত্মম্ভরিতার ব্যাকরণ ও অভিধানের সহিত মিলাইয়া তাহার একটা গূঢ় অর্থ ব্যাখ্যা করিতে থাকে। সে যে কাজ দেখে, আত্মাভিমানের চাবি দিয়া সেই কাজের গূঢ় কবাট উদ্‌ঘাটন করিয়া তাহার মধ্যে নিজের প্রতিমা দেখিতে পায়। সে মনে করে বিশ্বচরাচর খাওয়াদাওয়া বন্ধ করিয়া তাহার অনিষ্ট বা তাহাকে সন্তুষ্ট করিবার জন্যই দিন রাত্রি একটা পরামর্শ করিতেছে! সে পথপার্শ্বস্থিত সাপের মত সর্ব্বদাই মনে করে পান্থগণ তাহারই লেজ মাড়াইবার জন্য পাকচক্র করিতেছে, এই জন্য সে ভীত হইয়া আগে