পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সমালোচনা।

আমাদের কানে শব্দ আসে, কিন্তু তাহাকে শোনা বলি না; কারণ সে শব্দটা আমাদেব কান আছে বলিয়াই শুনিতেছি, আমাদের মন আছে বলিয়া শুনিতেছি না। কান বেচারার না শুনিয়া থাকিবার যো নাই, কিন্তু মনটা তথন ছুটি লইয়া গিয়াছিল। তেমনি আমরা যাহা জ্ঞানে জানি তাহা না জানিয়া থাকিবার যো নাই বলিয়াই জানি; সাক্ষী আনিয়া প্রমাণ করিয়া দিলেই জ্ঞানকে জানিতেই হইবে— সে যত বড় লোকটাই হউক না কেন, এ আইনের কাছে তাহার নিবৃতি নাই। কিন্তু উহার উর্ধ্বে আর জোর খাটে না। তেমনি আমরা অনেক অপ্রত্যক্ষ অতীত ঘটনা ঘটিয়াছিল বলিয়া জানি,কিন্তু আর তাহা অনুভব করিতে পারি না। মাঝে মাঝে অনুভব করিতে চেষ্টা করি, ভান করি, কিন্তু বৃথা!

 কিন্তু মাঝে মাঝে এমন হয় না কি, যখন অতীত ঘটনার নামে বহুবিধ ওয়ারেণ্ট জারি করিয়াও কিছুতেই মনের সম্মুখে তাহাকে জানিতে পারা গেল না, এমন কি যখন তাহার অস্তিত্বের বিষয়েই সন্দেহ উপস্থিত হইল, তখন হতে সেদিনকার একটি চিঠির একটু খানি ছেঁড়া টুকরা অথবা দেয়ালের উপর বহুদিনকার পুরাণ একটি পেন্সিলের দাগ দেখিবামাত্র সে যেন তৎক্ষণাৎ সশরীরে বিদ্যুতের মত আমার সমুখে আসিয়া উপস্থিত হয়। ঐ কাগজেব টুকরাটি, পেন্সিলের দাগটি তাহাকে যেন যাদু করিয়া রাখিয়াছিল, তোমার চারিদিকে আরও ত কত শত জিনিষ আছে, কিন্তু সেই অনীত ঘটনার পক্ষে ঐ ছেঁড়া কাগজ টুকু ও সেই পেন্সিলের দাগটুকু ছাড়া আর সকল গুলিই Non-conductor। অর্থাৎ আমরা এমনি ভয়ানক