পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
অনাবশ্যক

সুর একটা যা-হয়-কিছু অত্যন্ত যত্ন পূর্ব্বক বাধিয়া দেয় নাই, এমন কেহ আছে কি? যাহার জ্যোৎস্নার মধ্যে পুরাতন দিনের জ্যোৎস্না, যাহার বর্ষার মধ্যে পুরাতন দিনের মেঘ লুক্কায়িত নাই, এতবড় অপৌত্তলিক কেহ আছে কি? পৌত্তলিকতার কথা বলিলাম, কেন না প্রত্যক্ষ দেখিয়া অপ্রত্যক্ষকে মনে আনাই পৌত্তলিকতা। জগৎকে দেখিয়া জগতাতীতকে মনে আনা পৌত্তলিকতা। একটি চিঠি দেখিয়া যদি আমার অতীতকালের কথা মনে পড়ে তবে তাহা পৌত্তলিকতা নহেত কি? ঐ চিঠিটুকু আমার অতীত কালের প্রতিমা। উহার কোন মূল্য নাই, কেবল উহার মধ্যে আমার অতীত কাল প্রতিষ্ঠিত আছে বলিয়াই উহার এত সমাদর। জিজ্ঞাসা করিতেছিলাম, এমন কোন লোক কি আছে যে তাহার পুরাতন দিবসের একটা কোনও চিহ্নও রাখিয়া দেয় নাই? আছে বৈকি! তাহারা অত্যন্ত কাজের লোক, তাহারা অতিশয় জ্ঞানী লোক! তাহাদের কিছুমাত্র কুসংস্কার নাই। যতটুকুর দরকার আছে কেবল মাত্র ততটুকুকেই তাহারা খাতির করে। বোধ করি দশবৎসর পর্য্যন্ত তাহারা মাকে মা বলে, তাহার পর তাঁর নাম ধরিয়া ডাকে। কারণ, সন্তান পালনের জন্য যত দিন মায়ের বিশেষ আবশ্যক তত দিনই তিনি মা, তাহার পব অন্য বৃদ্ধাব সহিত তাঁহার তফাৎ কি?
 আমি যে সম্প্রদায়ের কথা বলিতেছি, তাহারা যে সত্য সত্যই বয়স হইলে মাকে মা বলেন না তাহা নহে। অনাবশ্যক মাকেও ইঁহারা মা বলিয়া আদর করিয়া থাকেন। কিন্তু অতীত মাতার