পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
সমালোচনা।

হইয়া পড়ে। অতএব ইহাতে কবিতার অশুভ আশঙ্কা করিবার কিছুই নাই।

 প্রথমে সৌরজগৎ একটি বাষ্পচক্র ছিল মাত্র, পরে তাহা হইতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হইয়া গ্রহ উপগ্রহ সকল সৃজিত হইল। এখনকার মতন তখন বৈচিত্র্য ছিল না। আমাদের এই বিচিত্রতাময় খণ্ড ও গীতি-কাব্য- সমূহের বীজ মাত্র সেই মহাকাব্যের মধ্যে ছিল। কিন্তু তাহাই বলিয়া আমাদের মত বসন্ত বর্ষা ছিল না; কানন পর্ব্বত সমুদ্র ছিল না; পশু পক্ষী পতঙ্গ ছিল না; সকলেরই মূল কারণ মাত্র ছিল। এখন বিচ্ছিন্ন হইয়া সৌরজগৎ পরিপূর্ণতর হইয়াছে। ইহার কোন অংশ সেই মহাসৌর-চক্রের সমান নহে বলিয়া কেহ যেন না বলেন যে জগৎ ক্রমশই অসম্পূর্ণতর হইয়া আসিয়াছে। এখন সৌরজগতের মহত্ত্ব অনুধাবন করিতে হইলে এই বিচ্ছিন্ন অথচ আকর্ষণ-সূত্রে বদ্ধ মহারাজ্যতন্ত্রকে একত্র করিয়া দেখিতে হইবে; তাহা হইলে আর কাহারো সন্দেহ থাকিবে না যে এখনকার সৌরজগৎ পরিস্ফুটতর, উন্নততর। জগতেরও উন্নতিপর্য্যায়ের মধ্যে শ্রমবিভাগ আছে। সৌরজগতের কাজ এত বাড়িয়া গিয়াছে যে, পৃথক্‌ পৃথক্‌ হইয়া কাজের ভাগ না করিলে কোন মতেই চলে না। যদি আধুনিক বিজ্ঞানরাজ্যের সীমা ছাড়াইয়াও কিয়দ্‌দূর যাওয়া যায়, যদি এই একত্র-সম্মিলিত বাষ্পরাশিগত অবস্থার পূর্বেও আর কোন অবস্থা থাকে এমন অনুমান করা যায়, তবে তাহা নানা স্বতন্ত্র আদিভূতসমূহের অস্ফুট ভাবে পৃথক্‌ ভাবে বিশৃঙ্খল সঞ্চরণ, পরস্পর সংঘর্ষ। যাহাকে ইংরাজিতে chaos বলিয়া থাকে। প্রথমে বিশৃঙ্খল পার্থক্য, পরে একত্র সম্মিলন, ও তাহার পরে