পাতা:সমূহ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সফলতার সদুপায়।
৫৫

না হয় তাহাকে ইম্পীরিয়ালিজ্‌ম্‌ই বল—যদি স্বার্থের দিকে তাকাইয়া ইংরেজ বলে, আমাদের ভারতরাজ্যকে আমরা পাকাপাকি চিরস্থায়ী করিব, আমরা সমস্ত ভারতবর্ষকে এক হইতে দিবার নীতি অবলম্বন করিব না, তবে নিরতিশয় উচ্চঅঙ্গের ধর্ম্মোপদেশ ছাড়া এ কথার কি জবাব আছে?

 কাঠুরিয়া যখন বনস্পতির ডাল কাটে তখন যদি বনস্পতি বলে, আহা কি করিতেছ, অমন করিলে যে আমার ডালগুলা যাইবে! তবে কাঠুরিয়ার জবাব এই যে, ডাল কাটিলে যে ডাল কাটা পড়ে, তাহা কি আমি জানি না, আমি কি শিশু! কিন্তু তবুও তর্কের উপরেই ভরসা রাখিতে হইবে?

 আমরা জানি পার্লামেণ্টেও তর্ক হয়, সেখানে এক পক্ষ আর এক পক্ষের জবাব দেয়; সেখানে এক পক্ষ আর এক পক্ষকে পরাস্ত করিতে পারিলে ফললাভ করিল বলিয়া খুসি হয়। আমরা কোনোমতেই ভুলিতে পারি না—এখানেও ফললাভের উপায় সেই একই।

 কিন্তু উপায় এক হইতেই পারে না। সেখানে দুই পক্ষই যে বামহাত ডানহাতের ন্যায় একই শরীরের অঙ্গ। তাহাদের উভয়ের শক্তির আধার যে একই। আমরাও কি তেমনি একই? গবর্মেণ্টের শক্তির প্রতিষ্ঠা যেখানে, আমাদেরও শক্তির প্রতিষ্ঠা কি সেইখানে? তাহারা যে ডাল নাড়া দিলে যে ফল পড়ে, আমরাও কি সেই ডালটা নাড়িলেই সেই ফল পাইব? উত্তর দিবার সময় পুঁথি খুলিয়ো না; এ সম্বন্ধে মিল্‌ কি বলিয়াছেন, স্পেন্সর্‌ কি বলিয়াছেন, সীলি কি বলিয়াছেন, তাহা জানিয়া আর শিকিপয়সার লাভ নাই। প্রত্যক্ষ শাস্ত্র সমস্ত দেশ ব্যাপ্ত করিয়া খোলা রহিয়াছে।

 সংক্ষেপে বলিতে গেলে, কর্ত্তার ইচ্ছা কর্ম্ম, এবং আমরা কর্ত্তা নহি! তার্কিক বলিয়া থাকেন—‘সে কি কথা! আমরা যে বহুকোটি টাকা