পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষোড়শ প্রবন্ধ । 5) যখন নিগুণ আত্মা সৰ্ব্বপ্রকার উপাধিবর্জিত স্বরূপ ভাবে দৃষ্ট হন তখন তিনি ব্ৰহ্ম নামে অভিহিত হন। যখন আত্মা প্রকৃতির স্রষ্টা রূপে তটস্থ ভাবে দৃষ্ট হন তখন তিনি ঈশ্বর নামে অভিহিত হন। কিন্তু ঈশ্বর ষে কেবল এক ভাবেই স্বষ্টি করিয়াছেন তাহ কে বলিতে পারে? এক এক স্বষ্টির আরম্ভ হইতে শেষ পর্য্যন্ত এক এক প্রকৃতি। ঈশ্বর কত প্রকার প্রকৃতির সৃষ্টি করিয়াছেন তাহার কোন ইয়ত্তা নাই। আমরা যে স্বষ্টির অন্তর্গত সেই স্বষ্টির প্রকৃতি, হিরণ্যগৰ্ভ এবং বিরাটপুরুষই আমাদের মন বুদ্ধি ও ইন্দ্রিয়ের গোচর। এক্ষণে প্রশ্ন হইতে পারে যে এককালে আমরা এক বিষয়ের অধিক চিন্তা করিতে পারি না তবে ঈশ্বর এককালে একের অধিক প্রকৃতি কি প্রকারে কল্পনা করেন । এই প্রশ্নের উত্তর এই যে, জীবের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ বলিয়া ঈশ্বরের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ মনে করা যুক্তি সঙ্গত নহে। জীব এককালে একাধিক সঙ্কল্প করিতে পারেন বটে কিন্তু সৰ্ব্বশক্তিমান, ঈশ্বর একইকালে অনায়াসে অসংখ্য প্রকৃতি কল্পনা করিতে পারেন। নিশ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ এবং পরিত্যাগ করিতে যেমন জীবের কিছু মাত্র কষ্ট হয় না সেইরূপ অসংখ্য প্রকৃতি কল্পনা করিতে ঈশ্বরের কিছুমাত্র আয়াস স্বীকার করিতে হয় না। আবার উক্ত প্রকৃতি সকলকে ঈশ্বর এমন সুকৌশলে কল্পনা করেন যে, ইহারা আপনা আপনিই আপনাদের সমস্ত ব্যাপার নির্দিষ্ট সিয়ম মতে সম্পন্ন করে। কিন্তু এই সমস্ত কল্পনা সেই অনন্ত চিন্ময় ঈশ্বরের চিচ্ছক্তির তুলনায় অতি সামান্ত এবং নগণ্য। সুতরাং অসংখ্য প্রকৃতি কল্পনা করিয়াও ঈশ্বর কল্পনাশূন্ত অবস্থায় থাকিতে পারেন। ঈশ্বরের এই শক্তিকে নির্দেশ করা বা চিন্তা করা জীবের বুদ্ধির অগোচর। জীবকে এই অনিৰ্ব্বচনীয় ঐশ্বরিক শক্তি বুঝাইবার জন্য শাস্ত্র সেই এক অদ্বিতীয় অবিভাজ্য ঈশ্বর বা ব্ৰহ্ম বা আত্মাতে অংশ কল্পনা করেন এবং স্বষ্টি স্থিতি লয় প্রভৃতি সমস্ত কল্পনাশূন্ত অদ্বিতীয় অবিভাজ্য অচিন্ত আত্মাকে ব্ৰহ্ম বলিয়া নির্দেশ করেন। সৰ্ব্ব প্রকার স্বাক্টর পূৰ্ব্বে এবং মহাপ্রলয়কালে আত্মার ভাব আলোচনা করিলে এই ব্রহ্মের তত্ত্ব কতক পরিমাণে হৃদয়ঙ্গম করা যায়। যখন আত্মাকে স্বষ্টি স্থিতি লয়কর্তা