পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ግ8 সরল বেদান্ত দর্শন । যেহেতু ভূলোক (পৃথিবী) ভূবলোক (অন্তরীক্ষ), স্বলোক (জীবের কৰ্ম্মফল জগু যে সকল লোক স্বঃ হয়), মহলোক (মহত্তত্ব বা হিরণ্যগৰ্ভ-লোক অর্থাৎ সমস্ত জীবগণের মন বুদ্ধি অহঙ্কার ও চিত্তের সমষ্টি), জনলোক (সমস্ত জীবের বিজ্ঞানের সমষ্টি বা অব্যক্ত প্রকৃতি), তপলোক (স্বষ্টি বিষয়ে ঈশ্বরের সঙ্কল্প) এবং সত্যলোক (অর্থাৎ ঈশ্বর বা অন্তর্যামী) , এই সপ্ত লোকেরই কারণ সেই প্রজ্ঞানমাত্র এবং যেহেতু পটে অঙ্কিত চিত্রের স্তায় সেই প্রজ্ঞানের মায়ার দ্বারা সেই প্রজ্ঞানেই এই সপ্তলোক প্রকাশিত রহিয়াছে। অতএব সেই প্রজ্ঞানই ব্ৰহ্ম । কোষীতকি ব্রাহ্মণোপনিষৎ বলিয়াছেন— আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও পৃথিবী এবং তাছাদের গুণ শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস ও গন্ধ এই দশ পদার্থের নাম ভুতমাত্রা । শ্রোত্র, ত্বক, চক্ষু, রসন ও নালিকা এবং তাহাদের শক্তি শ্রবণ, স্পর্শন দর্শন, আস্বাদন ও ভ্ৰাণ এই দশ পদার্থের নাম প্রজ্ঞামাত্রা। যেমন রথচক্রের শলাকাসমূহের উপর চক্রের বেড় অপিত থাকে এবং চক্রের মধ্যপিণ্ডের উপর শলাক সমূহ অৰ্পিত থাকে, সেইরূপ ভুতমাত্রা সকল প্রজ্ঞামাত্রায় কল্পিত আছে এবং প্রজ্ঞামাত্রা সকল প্রাণে কল্পিত আছে। এই প্রাণই অদ্বয়, অজর, অমর, আনন্দস্বরূপ, চিন্ময় আত্মা । কোষীতকি ব্রাহ্মণোপনিষৎ অন্যত্র বলিয়াছেন— হে বালাকে ! যিনি এই সকলের কৰ্ত্তা এবং এই সকল র্যাহার কৰ্ম্ম (কর্তৃত্বের ফল) তিনিই জ্ঞেয় অর্থাং র্তাহাকে অপরোক্ষ ভাবে জানা কৰ্ত্তব্য। শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ, বলিয়াছেন— ব্ৰহ্মতত্ত্বজি জ্ঞাস্ক সাধকগণ বক্ষঃস্থল গলদেশ এবং মস্তক উন্নত করত শরীরকে সরলভাবে রাখিয়া আসনে উপবেশনপূর্বক মন ও ইন্দ্রিয় সকলকে মনদ্বারা বিষয় সকল হইতে প্রত্যাহার করিয়া আপন হাদয়ে ংস্থাপন করিবেন এবং প্রণবমন্ত্র (ওঙ্কার) জপ করত ব্রহ্মচিন্তায় রত থাকিবেন । এইরূপ চিন্তা কয়িতে করিতে ক্রমশঃ ব্ৰহ্মতত্ত্ব পরিজ্ঞাত হইয়া সাধক সমস্ত ভয়াবহ সংসার স্রোত অতিক্রম করিবেন।