পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুৰ্ব্বিংশ প্রবন্ধ । Yዓዓ অমৃতবিন্দুপনিষদ বলিয়াছেন— অন্ধকার রাত্রিতে যতক্ষণ পথিক গমন করিতে থাকে ততক্ষণ উল্কার সাহায্য গ্রহণ করে এবং গন্তব্যস্থলে পৌছিলে উল্কা পরিত্যাগ করে,সেইরূপ যতকাল ন৷ সাধকের অপরোক্ষ ব্ৰহ্মজ্ঞান হয় ততকাল সাধক অধ্যাত্মশাস্ত্রশ্রবণ, শাস্ত্রবাক্যবিচার এবং শাস্ত্রোপদেশমত ধ্যান করিতে থাকিবেন। ব্রহ্মের অপরোক্ষ জ্ঞান হওয়ার পর সাধকের পক্ষে আর এই সমস্ত সাধনার কোন প্রয়োজন থাকে না । যতক্ষণ না পথিক গন্তব্য স্থানে উপস্থিত হন ততক্ষণ তিনি রথে ভ্রমণ করেন এবং গন্তব্য স্থানে পৌছিলে তিনি রথ পরিত্যাগ করেন, সেইরূপ যতকাল না সাধকের অদ্বৈতজ্ঞান হয় ততকাল সাধক শ্রবণ মনন ও নিদিধ্যাসন করিতে থাকিবে। সাধকের অদ্বৈতজ্ঞান হইলে তাহার আর ঐ সমস্ত সাধনার প্রয়োজন থাকে না । ব্রহ্মবিন্দুপনিষদ বলিয়াছেন— সেই ব্ৰহ্ম নিষ্কল অর্থাৎ তাহাকে অংশে অংশে ভাগ করা যায় না। তিনি নিৰ্ব্বিকল্প বা ভ্রমশূন্ত এবং নিরঞ্জন অর্থাৎ নিৰ্ম্মল । সাধকের যখন অপরোক্ষ জ্ঞান হয় যে আমিই সেই নিৰ্ব্বিকল্প, অনন্ত, হেতুদৃষ্টাস্তবজ্জিত (অর্থাৎ যাহার অন্ত কারণ নাই এবং যাহার উপমা নাই),অ প্রমেয়, অনাদি, পরমমঙ্গলনিধান, ব্ৰহ্ম, তখন তিনি অবিদ্যামুক্ত হইয়া ব্ৰহ্মত্ব প্রাপ্ত হন। যখন সাধকের অজ্ঞান ঘুচিয়া যায় এবং পারমার্থিক জ্ঞান হয় তখন তিনি দেখিতে পান যে, মরণ, জন্ম, বন্ধ, উপদেশ, মুক্তির ইচ্ছা এবং মুক্তি এ সমস্তই মায়াময়, বাস্তবিক ইহাদের পারমার্থিক অস্তিত্ব নাই। একই আত্মা মায়াদ্বারা জাগ্ৰং, স্বপ্ন, মুঘুপ্তিকালে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রকাশ পান। যখন সাধক আপনাকে জাগরণ, স্বপ্ন, স্বযুপ্তিমুক্ত আত্মা বলিয়া অপরোক্ষ ভাবে জানিতে পারেন তখন তিনি সংসারগতি হইতে মুক্ত হন। একই চন্দ্র যেমন জলপূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন আধারে ভিন্ন ভিন্ন চন্দ্ররূপে দৃষ্ট হয়, সেইরূপ একই আত্মা ভিন্ন ভিন্ন ভূতে ভিন্ন ভিন্ন ভূতাত্মাভাবে দৃষ্ট হন । খট ভগ্ন হইলে ও যেমন ঘটমধ্যস্থ আকাশের নাশ হয় না সেইরূপ জীবের বিজ্ঞানময়, মৰোময়, প্রণবময় ও অন্নময় কোষ নষ্ট হইলেও জীবের আত্মার নাশ ૨ ૭)