পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>b-8 সরল বেদান্ত দর্শন । ব্ৰহ্মজ্ঞানী সকল ক্লেশ হইতে মুক্ত হন সুতরাং ফলোৎপাদনের জন্ত । ব্ৰহ্মজ্ঞান কোন প্রকার ক্রিয়ার অপেক্ষা করে না, ব্ৰহ্মজ্ঞান হইবামাত্রই ব্ৰহ্মজ্ঞানী অবিদ্যা এবং অবিদ্যাজনিত শোকমোহাদি হইতে মুক্ত হন। অতএব কেবলমাত্র ব্রহ্মোপদেশ অনর্থক নহে । এবং ব্রহ্মজ্ঞানকে পরম পুরুষাৰ্থ বলায় বেদান্তশাস্ত্র কোন প্রকার অনর্থক বা অন্তায় উপদেশ দেন নাই । আর এক আপত্তি হইয়াছিল যে ব্ৰহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা এ বাক্য শত সহস্রবার বলিলেও জগতের অস্তিত্ব লোপ পায় না, সুতরাং জগৎ মিথ্যা নহে এবং অদ্বৈতজ্ঞান অসম্ভব। অতএব বেদান্ত শাস্ত্র ঐ প্রকার উপদেশ । দেন নাই। ইহার উত্তর এই যে, ব্ৰহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা এই বাক্য শত সহস্রবীর বলিলেই প্রহ্মজ্ঞান হয় ও অজ্ঞান ঘুচিয়া যায় এমন কথা বেদান্তশাস্ত্র বাস্তবিক বলেন নাই। বেদান্তশাস্ত্র বলেন আত্মা দ্রষ্টব্য, শ্রোতব্য, মন্তব্য ও নিদিধ্যাশিতব্য অর্থাৎ যতকাল তোমার অজ্ঞান না ঘুচিয়া যায় ততকাল তোমার পক্ষে এই চারিট সাধনা কৰ্ত্তব্য। সৰ্ব্ব প্রথমে আত্মা দ্রষ্টব্য । ইহার অর্থ এই যে, তোমার প্রবৃত্তিগুলি স্বাভাবিক বহিন্মুখী। যতকাল প্রবৃত্তিগুলি বহির্মুখী থাকিবে ততকাল আত্মজ্ঞানের কোনই সম্ভাবনা নাই। অতএব আত্মজ্ঞান লাভের প্রথম সাধনা এই যে, তোমার স্বাভাবিক বহিৰ্ম্ম ধী প্রবৃত্তিগুলিকে ইন্দ্ৰিয়সকল হইতে বিমুখ করিয়া আত্মতত্ত্বানুসন্ধানে নিযুক্ত করিবে। তাহার পরে আত্মা শ্রোতব্য অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রবৃত্তিগুলি আয়ন্ত হইয়া আত্মতত্ত্বানুসন্ধানে রত হইলে পর বেদ বেদন্তি মহাভারত পুরাণ তত্ত্ব প্রভৃতি যে সকল শাস্ত্রে আত্মতত্ত্ব বিষয়ক" উপদেশ আছে সেই সকল শাস্ত্র ও আত্মতত্ত্ববিষয়ক অন্তান্ত উপদেশ সদৃগুরু ও ভগবদ্ভক্তগণের নিকট শ্রবণ করিবে । শ্রবণ ক্রিয়া আবার দুই প্রকার (১) কেবলমাত্র কর্ণে শ্রবণ এবং (২) শ্রবণ করত ভক্তিপূৰ্ব্বক পালন । প্রথম প্রকারের শ্রবণকে শ্রবণ বলিয়া গ্রাহ করা যায় না। লোকে সৰ্ব্বদা " বলিয়া থাকে “আমি অমুককে অমুক কৰ্ম্ম করিতে বলিয়াছিলাম কিন্তু সে আমার কথা শুনে নাই "। এখানে “সে আমার কথা শুনে নাই” এই