পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8 সরল বেদান্ত দর্শন । ব্ৰহ্মজ্ঞান দ্বারা এই স্বষ্টিকে সঙ্কল্পময়ী অতএব পারমার্থিক অস্তিত্ববিহীন বলিয়া জীবের অপরোক্ষ জ্ঞান হয় , কেবল তখন কৰ্ম্মফলের লোপ হয়। এক্ষণে প্রশ্ন হইতে পারে যে, জড় হইতেই জড়ের উৎপত্তি হয়। এই জড় জগৎ যদি সেই ব্ৰহ্ম হইতে উৎপন্ন হইয়া থাকে তাহা হইলে ব্ৰহ্মকেও জড় পদাৰ্থ বলিতে হইবে। তাহার উত্তর এই যে, সেই ব্ৰহ্ম সমস্ত জগতের জ্ঞাত৷ অতএব এই সমস্ত জগৎ হইতে তিনি পৃথক । জগতের সমস্ত পদার্থ এবং তাহাদের গুণাগুণ ও ক্রিয়া সকল তাহার জ্ঞানেতেই প্রতিষ্ঠিত। র্তাহার তপ ও র্তাহার জ্ঞান ভিন্ন অন্য কিছুই নহে। স্বপ্নকালে যেমন জীবগণের মনই স্বপ্নদৃষ্ট জড় জগৎ স্বষ্টি করে, সেই প্রকারে সেই ব্রহ্ম মন বুদ্ধি ও ইঞ্জিয়শক্তি সমন্বিত জীবগণকে, রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দময় ও নানা নামে অভিহিত এই স্থল জগৎকে এবং স্বল্প ও স্থল জগতের বীজস্বরূপ অব্যক্ত প্রকৃতিকে চিন্তা করিয়াই স্বষ্টি করিয়াছেন। ব্রহ্মের তপ বা আলোচনা ভিন্ন অব্যক্ত প্রকৃতি বা এই জগতের অন্ত কোন কারণ বা পৃথক অস্তৃিত্ব নাই। স্বষ্টি বিষয়ে ব্রহ্মের এই সঙ্কল্প (Design) বা জ্ঞানকেও ব্রহ্ম বা বেদ বলা যায়। সেই বেদ হইতেই সমস্ত জগৎ স্বল্প হয়। জগতের সহিত তুলনায় এই বেদ নিত্য। স্থষ্টির পর এই বেদই শাস্ত্ররূপে প্রকাশিত হইয়াছে। অনন্তর অপর বিদ্যার বিষয় বর্ণনা পূর্বক পরা বিদ্যার অধিকার কিরূপে হইতে পারে নির্দিষ্ট হইতেছে। পদার্থ বিজ্ঞান সাধ্য এবং যাগাদি নিম্পাদ্য কৰ্ম্মফল সকল পরীক্ষা করিয়া বেদজ্ঞ ব্যক্তি যখন দেখিতে পান যে, উক্ত কৰ্ম্মফল সকল অনিত্য এব’ কৰ্ম্মদ্বারা নিত্য সুখলাভ করা অসম্ভব, তখন এই অনিত্য জগতের প্রতি আস্থা পৱিত্যাগ পূৰ্ব্বক বৈরাগ্য আশ্রয় করাই র্তাহার কৰ্ত্তব্য। অনন্তর পূৰ্ব্বোক্ত লক্ষণ ব্রহ্মের অপরোক্ষ জ্ঞান লাভার্থ তিনি যজ্ঞার্থ কাষ্ঠভার গ্রহণ পুৰ্ব্বক বেদতত্ত্বজ্ঞ ব্রহ্মনিষ্ঠ গুরুর নিকট গমন করিবেন। শাস্ত্রজ্ঞ হইলেও গুরু ব্যতীত স্বতন্ত্ররূপে ব্ৰহ্মতত্ত্বান্বেষণ কর্তৰ্য নহে। আপন বুদ্ধি মন ও ইঞ্জিয় সম্পূর্ণরূপে জয় করিতে পারিয়াছে কি না তাহ জীব আপন আপনি বুৰিতে পারে না। -