পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘88 সরল বেদান্ত দর্শন । যুক্তিসহ আত্মতত্ত্ববিচার এবং আত্মধ্যান করিতে করিতে ক্রমশঃ আত্মতত্ত্ব অপরোক্ষভাবে বিদিত হয়। আত্মতত্ত্বজ্ঞান হইলে এই সমস্ত জগৎ বিদিত হয়। সুতরাং ভক্তিপূৰ্ব্বক অধ্যাত্ম শাস্ত্রের বিচার আত্মজ্ঞান সাধনের একটা প্রধান অঙ্গ বলিয়; বৃহদারণ্যক শ্রুতিতেই নিৰ্দ্ধারিত হইয়াছে। ছান্দোগ্য উপনিষদের ষষ্ঠ প্রপাঠকে চতুর্দশ খণ্ডে ভগবান উদালক আরুণিঋযি আপন পুত্র শ্বেতকেতুকে বলিয়াছেন “হে সৌম্য! তস্করেরা কোন ব্যক্তির চক্ষু ও হস্ত বদ্ধ করিয়া তাহাকে গান্ধারদেশ হইতে আনিয়া বিজন অরণ্যে বন্ধাবস্থায় পরিত্যাগ করিয়া গেলে সেই ব্যক্তি দিগভ্রান্ত হইয়া চোরের আমাকে বদ্ধ করিয়া আনিয়া বদ্ধাবস্থায় ত্যাগ করিয়া গিয়াছে এই বলিয়া যেমন ইতস্ততঃ চীৎকার করিয়া বেড়ায় এবং আপন গন্তব্য পথ ঠিক করিতে পারে না, পরে ঈশ্বরেচ্ছায় কোন দয়াশীল ব্যক্তির সম্মুখে পড়িলে সেই দয়াশীল ব্যক্তি যেমন তাহার বন্ধন মোচন করত তাহাকে বলেন এই দিকে গান্ধারদেশ, তুমি এই দিকে যাও ; এবং সেই বন্ধনমুক্ত ব্যক্তি যেমন কোন গ্রামের পর কোন, গ্রাম এই প্রকার প্রশ্ন পূৰ্ব্বক উপদেশ পাইয়া উপদেশ অনুসারে আপন বুদ্ধিবলে স্বীয় গন্তব্য পথ অবধারণ করত গান্ধারদেশ পুনঃ প্রাপ্ত হয়, সেইরূপ জীব পাপপুণ্য কৰ্ম্মফল দ্বারা মায়াচ্ছন্ন হইয়া সৎচিৎআনন্দময় আপন আত্মাকে ভুলিয়া অবিদ্যা বশতঃ জড়দেহ, ইন্দ্রিয়, মন, বুদ্ধি বা অহঙ্কারকে আপন আত্মা মনে করিয়া সংসারারণ্যে প্রবিষ্ট হইয়া ভাৰ্য্যা পুত্র পশু বন্ধু প্রভৃতি দৃষ্টাদৃষ্ট অনেক বিষয়ে তৃষ্ণারূপ পাশদ্বারা বদ্ধ হয় এবং আমি অমুকের পুত্র বা কন্যা, আমি অমুকের স্বামী বা স্ত্রী, আমি অমুকের পিতা বা মাতা, ইহঁার আমার বান্ধব, আমি দুঃখী, আমি মুখী, আমি মূঢ়, আমি পণ্ডিত, আমি ধাৰ্ম্মিক, আমি বুদ্ধিমান, আমি জাত, আমি মৃত, আমি জীর্ণ, আমি পাপী, আমার পুত্র মরিয়াছে, আমার ধন নষ্ট হইয়াছে, আমি হত হইলাম, আমি কিরূপে জীবিত থাকিব, আমার কি উপায় হইবে, কে আমাকে ত্রাণ করিবে, এইরূপ শত সহস্ৰ অনর্থ ভাবনায় কষ্টবোধ করে। পরে পুণ্যফলে ঈশ্বরামুগ্ৰহে পরম কারুণিক ব্ৰহ্মাত্মবিৎ কোন সদগুরু