পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

© Ꮼ সরল বেদান্ত দর্শন । জন সভায় আরতি, আত্মজ্ঞান সাধনে নিত্য তৎপরত্ব এবং তত্ত্বজ্ঞান ফলালোচনা, এইগুলি পূর্ণ জ্ঞান সাধনোপযোগী বলিয়া ইহাদিগকে জ্ঞান বলা যায়। আর এই গুলির বিপরীত মানিত্ব, দস্তিত্ব ইত্যাদিকে জ্ঞান সাধনের বিরোধী বলিয়া অজ্ঞান বলা যায়। পুণ্যকৰ্ম্ম চারি প্রকার লোক ভক্তিপূৰ্ব্বক ব্রহ্মের উপাসনা করেন। যথা—বিপন্ন, কামনাপরতন্ত্র, ভগবত্তত্বজিজ্ঞাস্থ এবং জ্ঞানী। ইহাদের মধ্যে জ্ঞানীব্যক্তি নিত্যযুক্ত হইয়া অনন্তভাবে ঈশ্বরে ভক্তি করিয়া থাকেন। তিনিই ভক্তশ্রেষ্ঠ, তাহার ভক্তিই পরাভক্তি, এবং তাহার ঈশ্বর-প্রেমুই সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক, সুতরাং তিনিই ঈশ্বরের প্রিয়। - ভক্ত মাত্রেরই প্রকৃতি উদার , কিন্তু জ্ঞানিব্যক্তি ব্ৰহ্ম হইতে পৃথকৃ নছেন যেহেতু তিনি একমাত্র পরাৎপর ব্রহ্মকে আশ্রয় করিয়া থাকেন। বহুজন্ম ভজনা এবং জ্ঞান সাধনা করিলে পর, জ্ঞানিব্যক্তি ব্ৰহ্মকে প্রত্যক্ষ ভাবে দেখিতে পান। তখন র্তাহার অদ্বৈতজ্ঞান হয়। এই প্রকার মহাত্মা মুদুলভ। ব্ৰহ্মই সমস্ত জগতের উৎপত্তি হেতু। ব্ৰহ্ম হইতে সমস্ত জগৎ প্রবর্তিত হয়। এই তথ্য জানিয়া বিবেকীর পরমার্থতত্ত্বে অভিনিবেশ পূৰ্ব্বক ব্ৰহ্মকে ভজনা করেন। সুতরাং জ্ঞান না হইলে ভক্তি হয় না। ব্ৰহ্মাপিতচিন্ত, ব্রহ্মগত প্ৰাণ ভক্ত সমূহ, দ্যায়োপেত শ্রত্যাদি প্রমাণ দ্বারা পরস্পরকে ব্ৰহ্মতত্ত্ব বুঝাইয়া থাকেন এবং সৰ্ব্বদা ব্রহ্মবিষয়ে কথোপকথন দ্বারা পরিতোষ ও আনন্দ অনুভব করেন। - সতত যুক্ত ও ঈশ্বর প্রেমে মগ্ন সেই সকল ভক্তগণকে ঈশ্বর সম্যক, দর্শন লক্ষণ বুদ্ধিযোগ দান করেন এবং তদ্বারা তাহারা আপনাদিগকে ঈশ্বর হইতে অভিন্ন বলিয়া জানিতে পারেন। ঈশ্বরের অনুগ্রহে তখন তাহাদের পূর্ণজ্ঞান হয়, অজ্ঞান জন্য মায়া কাটিয়া যায়, এবং “আমিই ব্ৰহ্ম” ইহা তাহারা দেখিতে পান। তখন তাহার ব্রহ্ম এবং আমি (অহং) শব্দ একই অর্থেব্যবহার করেন (ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণও সেই অর্থেই অহং শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন)।