পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম প্রবন্ধ । や > ভাবে উপলব্ধ করা যায় না। যদি পৃথিবীতে কোন জীবেরই দর্শনশক্তি না থাকিত তাহা হইলে আমরা কেহই জগতের রূপ দেখিতে পাইতাম না, রূপের অস্তিত্বে বিশ্বাস করিতাম না। যদি আমাদের ভ্রাণশক্তি না থাকিত তাহা হইলে আমরা গন্ধের অস্তিত্ব অনুভব করিতে পারিতাম না। এই প্রকার যদি আমাদের অন্ত কোন ইন্দ্রিয়শক্তির অভাব থাকিত তাহা হইলে সেই ইন্দ্রিয়ের বিষয় আমাদের গোচর হইত না। আবার অন্ত কোন জগৎ নক্ষত্র গ্রহ বা উপগ্রহে যদি এমন কোন জীব থাকে যাহাদের চক্ষু, কর্ণ নাসিকা, জিহা ও ত্বক, ব্যতীত আরও অধিক ইন্দ্রিয় আছে তাহা হইলে আমাদের অপেক্ষ তাহারা অধিক বিষয় উপলব্ধ করিতে পারে। এই অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডে যে কত প্রকার জীব আছে কে তাহার ইয়ত্তা করিতে পারে ? সুতরাং ভৃগুমুনি স্থির করিলেন যে জগতে যত প্রকার ইন্দ্রিয়শক্তি ও অচেতন শক্তি আছে তাহাদের সমষ্টিই জগতের মূল কারণ। কিন্তু অচেতন শক্তিও এক প্রকার শক্তি এবং ইন্দ্রিয় শক্তিও এক প্রকার শক্তি । সুতরাং এই উভয় শক্তিই কোন এক মূল শক্তির ভাবান্তর মাত্র। চেষ্টার্থক অন ধাতু হইতে নিম্পন্ন প্রাণ শব্দ এই মূল শক্তিকেই বুঝায়। কৌষিতকী ব্রাহ্মণ উপনিষদে প্রাণশব্দের এই অর্থ অতি পরিষ্কাররূপে উক্ত হইয়াছে—আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, ও তাহাদের শক্তি, শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস, গন্ধ, এই দশ পদার্থের নাম ভুতমাত্রা বা অধিভূত। শ্রোত্রা, ত্বক, চক্ষু, রসন ও নাসিক এবং তাহাদেৱ শক্তি শ্রবণ, স্পর্শন, দর্শন, আস্বাদন এবং ভ্রাণ, এই দশ পদার্থের নাম প্রজ্ঞামাত্রা বা অধিপ্রজ্ঞ। অধিপ্রজ্ঞ অর্থাৎ প্রজ্ঞামাত্র ভুতমাত্র বা অধিভূতের সাপেক্ষ। যদি ভুতমাত্রা না থাকিত তাহা হইলে প্রজ্ঞামাত্রা থাকিত না। আবার অধিভূত অর্থাৎ ভুতমাত্রা অধিপ্রজ্ঞ বা প্রজ্ঞামাত্রার সাপেক্ষ। যদি প্রজ্ঞামাত্রা না থাকিত ভূতমাত্রা থাকিত না। এই দুই শ্রেণীর মধ্যে এক শ্রেণী অন্ত শ্রেণীর নিরপেক্ষ হইলে কিছুই হয় না। কিন্তু ইহার নানা অর্থাৎ পৃথক, নহে। যেমন রথ চক্রের অরের অর্থাৎ পাথার উপর নেমি অর্থাৎ চাকার বেড় অর্পিত, আবার চাকার মধ্যপিও অর্থাৎ ছাড়ির উপর আর সকল অর্পিত,