পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ প্রবন্ধ । নিগুণ আত্মার তত্ত্ব । ইতিপূৰ্ব্বে দেখা গিয়াছে যে ব্ৰহ্মজ্ঞান হইলে আর ব্যবহারিক দৃশ্য, দর্শন ও দর্শক প্রভৃতি ভেদজ্ঞান থাকে না, তখন কেবল একমাত্র স্বগতস্বজাতীয়-বিজাতীয়-ভেদ-রহিত আত্মা ব্যতীত আর সমস্ত পদার্থই মায়াময় অতএব সত্ত্বাবিহীন রূপে দৃষ্ট হয়। ছান্দেগ্যোপনিষৎ বলিয়াছেন— যে অদ্বৈত ব্রহ্মে (১) এক অন্তকে দেখে না, এক অন্তকে শুনে না, এক অন্তকে জানে না, সেই অদ্বৈত ব্ৰহ্ম বৃহত্তমাৰ্থক ভুম শব্দ বাচ্য। যে অবস্থায় এক অন্তকে দেখে, এক অন্তকে শুনে, এক অন্তকে জানে সেই দ্বৈত ভাবাপন্ন জগৎ অল্পশব্দবাচ্য। ভূমা অমৃত এবং অল্প মৰ্ত্ত্য। নারদ মুনি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন “হে ভগবন্‌! সেই ভূমা কাহাতে প্রতিষ্ঠিত ?” উত্তরে ভগবান সনৎকুমার বলিয়াছিলেন “ভূম আপন মহিমাতে আপনি প্রতিষ্ঠিত । তাহার অপর কোন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নাই। তিনি নিজেই নিজের প্রতিষ্ঠা।” বৃহদারণ্যক শ্রুতি বলিয়াছেন— অদ্বৈত আত্মা মায়া প্রভাবে যখন দ্বৈতভাবে প্রতিভাত হন, তখন দ্রষ্ট দর্শনেন্দ্রিয় দ্বারা দ্রষ্টব্য পদার্থ দর্শন করে, ভ্রাতা ব্ৰাণেন্দ্ৰিয় দ্বারা ভ্রাতব্য পদার্থ আঘ্ৰাণ করে, শ্রোতা শ্রবণেন্দ্রিয় দ্বারা শ্রোতব্য বিষয় শ্রবণ করে, বক্তা বাগিঞ্জিয় দ্বারা অপর ব্যক্তিকে অভিবাদন করে, মন্তা মননেঞ্জিয় দ্বারা মন্তব্য বিষয় মনে করে, এবং বিজ্ঞাতা বিজ্ঞানেন্দ্রিয় দ্বারা বিজ্ঞাতব্য বিষয়ের জ্ঞানলাভ করে। কিন্তু স্বপ্নকালে দৃষ্ট জগৎ জাগরণা (১) স্বষ্টির পুর্বের অবস্থায় যখন ব্ৰহ্ম ব্যতীত আর কিছুই ছিল না, এবং জ্ঞানীর চক্ষে এখনও স্বেরূপ এক ব্ৰহ্ম ব্যতীত আর কিছুই নাই সেই অবস্থায়।