পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্দশ প্রবন্ধ।

i::

তটস্থ লক্ষণ আত্মার উপাসনা। পূৰ্ব্বে দেখা গিয়াছে যে যদিও ব্রহ্ম নিজে ৰাস্তৰিক নিৰ্ব্বিকার তথাপি তিনি আপন মায়া দ্বারা আপনাকে দ্রষ্ট ও দৃপ্তরূপে বিবৰ্ত্তিত করিয়া এই জগৎ স্মৃষ্টি করেন। জগৎ ব্রহ্মের বিকার নহে কিন্তু বিবৰ্ত্ত । দুগ্ধের বিকারে দধির উৎপত্তি হয় ; এখানে দধির উৎপত্তির জন্ত দুগ্ধের স্বরূপ বিকৃত হইয়া যায়, দধিতে আর দুগ্ধের স্বভাব থাকে না। দ্রষ্টার ভ্রমবশতঃ এক বস্তু অন্তরূপে দৃষ্ট হইলে সেই বস্তুটী বিবৰ্ত্তিত হইয়াছে বলা যায়। কোন বস্তুর বিবৰ্ত্ত হইলে সেই বস্তুর নিজের স্বরূপে কোনরূপ বিকৃতি হয় ন। রজ্জ্বকে সর্পভাবে দর্শন, মরুভূমিকে জলভাবে দর্শন, প্রভৃতি ভ্রাক্তি মূলক দৃষ্টি বিবর্তের দৃষ্টান্ত। নিৰ্ব্বিকার ব্ৰহ্মই আপন মায়ার প্রভাবে স্ত্রই দৃশ্য-দর্শন সমন্বিত জগৎরপে বিবৰ্ত্তিত হইয়াছেন। এই বিবর্তনে ব্রন্ধের কোনরূপ বিকার হয় নাই। ঐন্দ্রজালিকের মায়ার স্তায় এবং স্বপ্নকালের দৃষ্টির স্থায় ঈশ্বরের মায়াবশে এই মিখ্যা জগৎ সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মে সত্যরূপে প্রতিভাত হয়। ব্রহ্মের স্বরূপ উপাসনা পারমার্থিক সত্যমূলক ও তটস্থ লক্ষণ উপাসনা ব্যবহারিক সত্যমূলক। সুতরাং ব্রহ্মের তটস্থ লক্ষণ উপাসনা স্বরূপ উপাসনার অপেক্ষা সহজে আয়ত্ত করা যায় বলিয়া শাস্ত্র অনেক স্থলে তটস্থ লক্ষণ ব্রহ্মের উপাসনা বিধান করিয়াছেন। তটস্থ লক্ষণ উপাসনায় নিগুণ ও অচিন্ত্য ব্ৰহ্ম স্বষ্টিকৰ্ত্ত ও ঈশ্বর ও অন্তর্যামী ও আদ্যাশক্তি ও জগদ্ধাত্রী ও দুর্গ ও তারা প্রভৃতি ভাবে উপাসিত হন। এই উপাসনায় ব্রহ্মের অব্যক্ত অচিন্ত্য স্বরূপ সচ্চিদানন্দ ভাব প্রধান ভাৰে এবং তাহার স্বষ্টিকর্তৃত্ব প্রভৃতি লক্ষণ ও র্তাহার স্বল্প জগৎ অবলম্বন ভাবে উপাসকের মনে বর্তমান থাকে। >‘>