পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

॥৵৹

অস্ফূটগুঞ্জন শুনতে পাওয়া যায়। ধ্রুবার পরিণাম যেন আমাদের মনে সবিস্ময়ে এই প্রশ্ন জাগায়; এ কল্পনা না দূরদৃষ্টি? এমন একটি সৌন্দর্য্য সুষমামণ্ডিত ভাব বিকশিত সুন্দর জীবন যেন অকরুণ ভাগ্য দেবতার অনেকখানি হেলা ফেলায় অকালে নষ্ট হয়ে গেছে, একথা মনে হলে দুঃখ রোধ করা যায় না। ফুটন্ত পদ্মটিকে টেনে তুলে ছিঁড়ে ফেলা হলো, ভাল করে বিকশিত হতে দিলেন না, এই বলে অকরুণ বিধাতাকে নিন্দা করতে ইচ্ছা করে। কবি রজনী কান্তের এই বিলাপ বাণীটি কানে ভেসে আসে;—

“ফুটিতে পারিত গো ফুটিলনা সে,
নীরবে ঝরে গেল, অকালে মরে গেল,
প্রাণ ভরা আশা সমাধি পাশে।”

 উপন্যাসের মধ্যে এবং কবিতা পুস্তক ‘কিশলয়ে’ লেখিকার যে পরিচয় পাওয়া যায় সেইটাই তাঁর সুস্পষ্ট পরিচয় পত্র। জগতের ক্ষুদ্র সুখ দুঃখকে নাড়া চাড়া করতে করতে অবশেষে সহসাই যেন জগদতীতের পদপ্রান্তে স্থান গ্রহণ করতে পেরেছেন। যেমন “শিল্পীর’’ মডেল থেকে “প্রতীক্ষা কারিণী” এবং তার পরেই হঠাৎ “পূজারিণী” “উপাসিকায়’’ পরিণতা হয়েছিলেন!

“কেন তাড়াতাড়ি কাজ সারা আর—
নাই উদ্দাম প্রাণের ঢেউ,
মোর তরে আজ অধীর আবেগে—
পথ চেয়ে আর নাইত কেউ।’’
“নিভে যায় শোকানল কালের মায়ায়,
স্মৃতির আগুন কভু নে’ভেনা ত হায়!”

“প্রতীক্ষিতার” বুকভাঙ্গা বিলাপমর্ম্মর পার হয়ে এসে যেখানে আমরা শুনতে পেলেম