‘ওপারেতে লঙ্কা গাছটি রাঙা টুক্টুক্ করে।
গুণবতী ভাই আমার মন কেমন করে।’
ইজল বিজল কাজলনাতা, ঝড়ে কাঁপছে গাছের পাতা।
আয় ঝড় আয়, খোকা আমার নাইতে যায়।’
অথবা ‘আয় ঘুম ঘুম, যায় ঘুম ঘুম, ঘুমোলো গাছের পাতা।’ প্রভৃতি থেকে আরম্ভ করে বহু সতীনের খোয়ার, বৌয়েদের ছিদ্র, শাশুড়ী ননদের কলহের ছড়া এই যুগের লেখা। মধুমালা, শঙ্খমালা, কাঞ্চনমালা প্রভৃতির গল্পও এই যুগে তার শেষরূপ ধরেছে।
এ যুগের নারী কবিদের মধ্যে যাঁদের নাম জানা যায় তাঁদের মধ্যে সব চেয়ে বিখ্যাতা বিদুষী আনন্দময়ী।
বিক্রমপুরের অন্তর্গত জপ্সা গ্রামে বৈদ্যবংশীয় লালা জয়নারায়ণ ১৭৭২ খৃষ্টাব্দে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী আনন্দময়ীর সঙ্গে একত্রে হরিলীলা নামক সত্যনারায়ণের লীলাবিষয়ক কাব্য রচনা করেন। আনন্দময়ীর পিতা রামগতি রায় ‘মায়াতিমিরচন্দ্রিকা’র লেখক এবং সুপণ্ডিত এবং ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন। ন’ বছর বয়সে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয় পয়গ্রামের অযোধ্যারাম সেনের সঙ্গে। তাঁর অধ্যাপক ছিলেন সুপ্রসিদ্ধ পণ্ডিত কৃষ্ণদেব বিদ্যাবাগীশ। গুরুপুত্র হরিদেব বিদ্যালঙ্কারের লেখার অশুদ্ধি ধরে আনন্দময়ী অধ্যাপককে ছেলের লেখাপড়ার সম্বন্ধে অমনোযোগী হওয়ার জন্য তিরস্কার করেন। রাজা রাজবল্লভ এক সময় আনন্দময়ীর পিতা রামগতি রায়ের কাছে অগ্নিষ্টোম যজ্ঞের প্রমাণ ও প্রতিকৃতি চেয়ে পাঠান, রামগতি সে সময় পূজায় ব্যস্ত থাকায় আনন্দময়ী সেগুলি লিখে এবং এঁকে পাঠান