পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
১১৩

অতিক্রম ক’রল। তার পিতা তাঁকে তখন শব্দশাস্ত্র পড়াবার জন্য বাহাদুর পুর নিবাসী বদনচন্দ্র তর্কালঙ্কার মহাশয়ের বাটীতে প্রেরণ করেন। তখনকার ভদ্রপরিবারস্থ বালিকাগণ টোলে কিংবা পাঠশালায় বালকদিগের সঙ্গে একত্র পাঠাভ্যাস করত। এই সময় নারায়ণ দাসের মৃত্যু হয়। পরে রূপমঞ্জরী সর্‌ নামক গ্রাম নিবাসী গোকুলানন্দ তর্কালঙ্কারের নিকট কাব্যপাঠে বশেষ পারদর্শিতা লাভ ক’রে শেষে এঁর কাছে বৈদ্যশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।

 রূপমঞ্জরীর চরিত্র অতি নির্মল ছিল। ইনি বিয়ে করেননি, মস্তক মুণ্ডন ক’রে কেবল একটী শিখা রেখেছিলেন এবং কোনও স্থানে গমন করবার সময় পুরুষের মত উত্তরীয় ব্যবহার করতেন।

 বহু লোক রূপমঞ্জরীর নিকট ব্যাকরণ, চরক ও নিদান প্রভৃতি দুরূহ শাস্ত্র সমুদয় অধ্যয়ন করেছিলেন। মানকর নিবাসী বিখ্যাত চিকিৎসক ভোলানাথ কবিরাজ মহাশয় অনেক সময় ইহার নিকট চিকিৎসা সম্বন্ধে উপদেশ গ্রহণ করতেন।

 চৈতন্যদেবের অভ্যুদয়ের পর বাংলার বৈষ্ণব সমাজের জীবনে এবং সাহিত্যে যে জোয়ার এসেছিল তার ফলে বাংলার গ্রামে গ্রামে হরিসঙ্কীর্তন রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক গান শোনা বা রচনা করা অত্যন্ত অশিক্ষিত এবং নিরক্ষর লোকের পক্ষেও অসম্ভব হয়নি। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের স্ত্রী পুরুষে লোকের বাড়ী বাড়ী হরিনাম গান শুনিয়ে ভিক্ষা ক’রত এবং এখনও করে। সেই সব গানের মধ্যে অনেক সময়ে তাদের নিজেদের রচনাও থাকত। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বহু নীচজাতীয়া নারী, তাঁদের মধ্যে বৈষ্ণবী এবং

O.P. 92—15