পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

আমার চিত-কমল-দলে, সুরভি ছিল স্বপন ছলে,
অমল মম সে পরিমলে গগনতল ছেয়েছি।”

 আবার এরই পার্শ্বে তাঁর রুদ্ররসের দুন্দুভি-নিনাদ, “প্লাবন” কবিতায়;—

সংহর সংহর রুদ্র এ তব সংহার বেশ,
সম্বর তাণ্ডব নৃত্য হে শম্ভো! হে প্রমথেশ!
মৃত্যুঞ্জয় জটাজাল, রুদ্ধ কর মহাকাল,
বহ্নিধূমে ধারাপাতে শ্বাসরুদ্ধ হল শেষ।
কোন যুদ্ধ প্রয়োজনে সাজিয়াছ হে ধূর্জটি?
নবীন নীরদজালে সর্পিয়া বেঁধেছ কটি।
মেঘ ডম্বরুর রবে, সভয় কম্পিত সবে,
ছিন্ন ভিন্ন দশ দিশি, চন্দ্রসূর্য্য পড়ে টুটি।
জটামুক্ত জহ্নুসুতা চরণে পড়িছে লুটি।’

 ইন্দিরা দেবীর কবিত্ব-খ্যাতি একদা রবীন্দ্রনাথ মুক্তকণ্ঠেই স্বীকার করেছিলেন। “এডুকেশন গেজেট” পত্রে তাঁর বহু কাব্য ও কবিতা প্রকাশিত হলেও পুস্তকাকারে ছাপা হয়নি। সে যুগে ছাপা হ’লে তাঁর কাব্যগুলি “কুমারসম্ভব” “ভট্টিকাব্য” “সাবিত্রী চরিত” “বাল্মীকি রামায়ণের আদি কাণ্ডের” পদ্যানুবাদ প্রভৃতি এবং বহুতর খণ্ড কবিতার জন্য ইন্দিরা দেবী যে তখনকার দিনের শ্রেষ্ঠ নারী কবিদের মধ্যের অন্যতমা বলে বিবেচিত হতেন, তাতে সন্দেহ নেই। পরের দিনে তাঁর বহু কবিতা বিভিন্ন মাসিক পত্রে প্রকাশিত হয়েছে এবং তাঁর দেহান্তের পর কয়েকটী মাত্র কবিতা একত্রে গ্রথিত হয়ে কাব্যগ্রন্থ “গীতিগাথায়” স্থান পেয়েছে।