পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

জ্ঞানেশ্বরের ভগ্নী এবং সুপণ্ডিত। কখনো তার ভাষা খুব সরল, কখনো তার ভাষা হেঁয়ালিতে ভরা। মুক্তা বাইয়ের রচনার একটু নমুনা দিচ্ছি: বলা বাহুল্য প্রথম কবিতাটির অর্থ সহজবোধ্য নয়, এটি ভক্তিমার্গেরও কথা। (১) আশ্চর্য্য (মুঙ্গি উড়তি আকাশি......ইত্যাদি)

‘পিপড়ে আকাশে উড়ে গিলিয়াছে সূর্য!
বন্ধ্যার হ’ল ছেলে, এ কি আশ্চর্য!
বৃশ্চিক মথিতেছে পাতালের কুণ্ডে!
শেষ নাগ তার কাছে আছে হেঁট মুণ্ডে!
মাছির উদরে হ’ল ঈগলের সৃষ্টি!
মুক্তা বাঁচে না হেসে দেখে অনাসৃষ্টি!

 একবার লোকের অত্যাচারে নিন্দাবাদে বিরক্ত হয়ে জ্ঞানেশ্বর কুটীরের দ্বার বন্ধ করেছিলেন, তিনি বোনকেও ঘরে ঢুকতে দেবেন না স্থির করেছিলেন। সেই উপলক্ষ্যে মুক্তা এই কবিতাটি রচনা করেন—

(২) (মজবরী দয়া করা...ইত্যাদি)

দয়া করে ভাই, দুয়ার খুলিয়া দাও মোরে ঘরে স্থান!
সেই তো সাধক, যে পারে সহিতে দুনিয়ার অপমান।
সেই তো মহান, অভিমান যার নিঃশেষে হ’ল লয়,
সেই মহাপ্রাণ যার ভালোবাসা সবার উপরে র’য়।
তুমি যে ব্রহ্ম, বিশ্ব ব্যাপিয়া বিরাজিছ অহরহ,
তোমার হৃদয়ে ক্রোধ পাবে ঠাই কেমন করিয়া কহ?
প্রজ্ঞা তোমার স্থির হোক ভাই, ভ্রম হোক অবসান।
খোলো খোলো দ্বার, ভগিনী তোমার দ্বারে দণ্ডায়মান।