পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

কবিদের মধ্যে অন্যতম ব’লে বিবেচিত হয়েছিলেন, সে কথা পূর্বে বলেছি। গুজরাতের চরম উন্নতির যুগে, আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে, সিদ্ধরাজ জয়সিংহের মা ‘মীনল-দেবী’ অন্‌হিল্‌বাড়ার রাজসিংহাসনে উপবিষ্টা ছিলেন। নাবালক পুত্রের নামে এই বিদুষী ধর্মপ্রাণা নারী কেবল দীর্ঘকাল রাজ্য শাসনই করেন নি, গুজরাতের শিল্পে সাহিত্যে ধর্মে তিনি যে প্রেরণা দিয়ে গিয়েছিলেন তার জন্য গুজরাতবাসী আজও তাঁকে দেবী জ্ঞানে পূজা করে। তাঁর পর দ্বাদশ শতাব্দীতে মহারাজ অজয়পালের বিধবা মহিষী ‘নায়িকা দেবী’ সিহাবুদ্দিন মহম্মদ ঘোরীকে সম্মুখযুদ্ধে পরাস্ত ক’রে স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করেন। নায়িকা দেবী শুধু অসিচালনায় সুপটু ছিলেন না, ভারতীয় এবং বহির্ভারতীয় রাজনীতির কূটকৌশল তাঁর সম্যক্‌ রূপে জানা না থাকলে দিগ্বিজয়ী ঘোরীর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করা তাঁর পক্ষে সম্ভবপর হত না। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মহারাজাধিরাজ বিশালদেবের মন্ত্রী তেজপালের পত্নী অনুপমা দেবী এবং বাস্তুপালের পত্নী ললিতা দেবী তাদের ধর্মানুরাগ, শিল্পানুরাগ এবং সাহিত্যানুরাগের জন্য অমর খ্যাতি লাভ করেছেন। আবুপর্বতের মর্মর মন্দির আজও তাঁদের সৌন্দর্যজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছে, কিন্তু তাদের অন্যান্য কীর্তির কথা অনেকেই জানেন না। তেজপালের পত্নী অনুপমা রাজ্যশাসনে স্বামীর দক্ষিণহস্তস্বরূপা ছিলেন, মুসলিম প্রজাদের জন্য মসজিদ নির্মাণ তাঁর মহাপ্রাণতার এবং সংস্কারমুক্ত সর্বাঙ্গীণ শিক্ষার পরিচয় দেয়। বাস্তুপাল বিদুষী পত্নী ললিতা দেবীর অনুপ্রেরণায় আঠারো কোটি মুদ্রা ব্যয়ে তিনটি গ্রন্থাগার নির্মাণ